ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ যখন উঠেছিলো তখন তার বয়স ছিলো ২০। এর জন্যে দীর্ঘ ১৬ বছর কারাগারেও থাকতে হয়েছে। সাজা শেষে মুক্তি পেলেও ছায়া হয়ে সঙ্গে ছিলো ধর্ষকের তকমা। তবে প্রায় ৪০ বছর পেরিয়ে আদালত যখন তার বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ তুলে নিলো, তখন আর নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি অ্যান্টনি ব্রডওয়াটার।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়, ঘটনার শুরু ১৯৮১ সালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের এক নির্জন পার্কে ধর্ষণের শিকার হন সাইরাকিউস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী অ্যালিস সেবোল্ড। সেই ঘটনার বিবরণ প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালের এক বইয়ে। সেবোল্ড নিজেই লেখেন বইটি।
‘লাকি’ নামক ওই বইয়ে সেবোল্ড বলেন, অত্যাচারের বেশ কয়েক মাস পর নিউ ইয়র্কের মার্শাল স্ট্রিট থেকে হেঁটে যাওয়ার সময় এক দিন ওই অভিযুক্তকে দেখেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্রডওয়াটারকে গ্রেফতার করে। ১৬ বছর জেলে কাটিয়ে মুক্তি পেলেও ‘সেক্স অফেন্ডার’ রেজিস্ট্রিতে নাম থেকে যাওয়ায় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির জায়গা, উপেক্ষিত হয়েছেন সব জায়গায়।
কিন্তু যদি তিনি নির্দোষই হন, তা হলে কেন এত সংকটের মধ্যে পড়লেন ব্রডওয়াটার। এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তার আইনজীবীরাই। তারা জানান, যে সময়ে ঘটনাটি ঘটে তখন ওই সময় ডিএনএ পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না। ফরেন্সিক প্রমাণ বলতে অভিযুক্তের একটি চুলের নমুনা ছিল তদন্তকারীদের কাছে। তবে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে তা পরীক্ষা করা ছাড়া আর অন্য কোনোভাবে পরীক্ষার উপায় ছিল না সে সময়।
পাশাপাশি, অভিযোগকারী নিজেও শনাক্তকরণে ভুল করেছিলেন। নিজের বইতেই এই কথা জানিয়েছেন সেবোল্ড। তিনি লিখেছিলেন, শনাক্তকরণের সময়ে ব্রডওয়াটারের পাশে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের দু’জনকে একই রকম দেখা গিয়েছিলো। ফলে ব্রডওয়াটারের নাম বলার পরে তার এক বার মনেও হয়েছিল যে তিনি ভুল করেছেন।
নির্দোষ ব্রডওয়াটারের ওপর থেকে যখন ধর্ষকের তকমা উঠে গেলো তখন তার বয়স ৬১। আদালতের রায় শুনে তিনি বলেন, ভাবিনি যে এই দিনটি কোনো দিন দেখতে পারবো।
আরো পড়ুন: