ডেস্ক প্রতিবেদন, ধূমকেতু বাংলা: চিলির নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা বামপন্থী গ্যাব্রিয়েল বোরিক। তিনি কট্টর ডানপন্থী রক্ষণশীল নেতা জোসে অ্যান্তোনিও কাস্তকে পরাজিত করেন। গতকাল রোববার ভোট হয় দেশটিতে। বোরিক ৫৬ শতাংশ ও প্রতিদ্বন্দ্বী কাস্ত পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বামপন্থী গ্যাব্রিয়েল বোরিকের বয়স ৩৫ বছর। নির্বাচনে এ জয়ের ফলে বোরিক বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধান রাজনৈতিক নেতাদের একজন হলেন। তিনি চিলির ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন।
১৯৯০ সালে দেশটিতে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরে আসার পর এবারের নির্বাচনে মেরুকরণ ছিল সবচেয়ে বেশি।
নির্বাচনী প্রচারের সময় উত্তাপ ছড়িয়েছিল। প্রচারের সময় কখনো কখনো জোসে অ্যান্তোনিও কমিউনিস্ট পার্টিকে নিয়ে গঠিত গ্যাব্রিয়েল বোরিকের নেতৃত্বে বাম জোটকে তুলাধোনা করেছেন। তিন দশক আগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল অগাস্টো পিনোচেটের শাসনামলের হয়ে কথা বলার কারণে অবশ্য রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনার মুখেও পড়েছেন অ্যান্তোনিও কাস্ত।
অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে চিলিতে কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভ হয়েছে। এরপর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হলো। এ ভোটের কারণে অবশেষে সংবিধান সংস্কারের পথ তৈরি হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটির কয়েক দশকের পুরোনো সংবিধান তৈরির চেষ্টা এখন চলমান।
ট্রেসকুইনটোস নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক কেনেথ বাংকার চিলির এবারের নির্বাচনকে ‘শীতল যুদ্ধের বৃত্তে আটকে থাকা কমিউনিজম বনাম ফ্যাসিবাদের মধ্যে’ বলে মন্তব্য করেছিলেন। এটা বাম বনাম ডানের পুরোনো সেই বিভাজন।
নভেম্বরের মাঝামাঝি চিলিতে প্রথম রাউন্ডের ভোট হয়েছে। ওই নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেস ও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্যদের নির্বাচন করেন দেশটির ভোটাররা। এরপর সেখানে এগিয়ে থাকা দুজন ৫৫ বছর বয়সী অ্যান্তোনিও কাস্ত আর ৩৫ বছরের বোরিকের মধ্যে ভোটযুদ্ধ হয়।
সাবেক কংগ্রেস সদস্য কাস্ত অতি ডানপন্থী হিসেবে পরিচিত। ৩৫ বছরের বোরিক সাবেক ছাত্রনেতা। বামপন্থী একটি জোটের প্রার্থী হয়ে তিনি এবার লড়েছেন। গত নভেম্বরের প্রথম রাউন্ডের নির্বাচনে সাতজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।
চিলির অনেক মানুষ মুক্তবাজার অর্থনীতির সমর্থক, যা কপার ধাতুতে সমৃদ্ধ এ দেশের কয়েক দশকের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এর মাধ্যমে লাতিন আমেরিকায় অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার অন্যতম প্রতীক হয়ে ওঠে চিলি। তবে অনেক মানুষ গভীর অর্থনৈতিক বৈষম্য ঠেকাতে মরিয়া। প্রতিনিয়ত এ সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যেসব দাবি নিয়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি উচ্চকিত, তার মধ্যে অন্যতম একটি অবসরকালীন আংশিক ভাতা। সমালোচকেরা এর জন্য চিলির পেনশনব্যবস্থার উচ্চমাত্রায় বেসরকারীকরণকে দায়ী করে থাকেন। অন্যরা আবার উচ্চমূল্য, অনিশ্চিত বেসরকারি শিক্ষা, বেসরকারি ও সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পার্থক্য নিয়ে সমালোচনায় মুখর।
আরো পড়ুন:
ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক দূত হিসেবে প্রথম কোনো মুসলিম নিযুক্ত দিল যুক্তরাষ্ট্র