খেলাধুলা

৩৩ বছরের রেকর্ড ভেঙে দ্রুততম মানবী টম্পসন

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: অলিম্পিকের তিন আসরে ১০০ মিটারের মুকুট জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না জ্যামাইকার শেলি-অ্যান ফ্রেজার-প্রাইসের। ‘বিশাল অর্জনের’ স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল। তাকে পেছনে ফেলে টোকিও অলিম্পিকসে দ্রুততম মানবীর মুকুট পরেছেন তারই স্বদেশি এলেইন টম্পসন।

টোকিওর অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শনিবার অলিম্পিকসের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ইভেন্টের একটি মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ১০ দশমিক ৬১ সেকেন্ড সময় নিয়ে মুকুট ধরে রাখলেন টম্পসন। ভাঙলেন অলিম্পিকসের ৩৩ বছরের পুরান রেকর্ড।

১৯৮৮ সালের সিউল অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরেন্স গ্রিফিথ-জয়নার ১০ দশমিক ৬২ সেকেন্ড টাইমিং নিয়ে এতদিন অলিম্পিকসের রেকর্ড টাইমিংয়ের মালিক ছিলেন।

টম্পসনের টাইমিং মেয়েদের ১০০ মিটারের ইতিহাসে দ্বিতীয় সেরা। ১৯৮৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানাপোলিসে অলিম্পিক ট্রায়ালে ১০ দশমিক ৪৯ সেকেন্ড নিয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন গ্রিফিত। ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের এই সাবেক তারকার চেয়ে মাত্র দশমিক ১২ সেকেন্ড বেশি সময় নিয়ে টোকিওতে দৌড় শেষ করেছেন ২৯ বছর বয়সী টম্পসন।

২০১৬ সালের রিও দে জেনেইরো অলিম্পিকে সোনা জয়ের পরের সময়টা ‍খুব একটা ভালো যায়নি টম্পসনের। চোটে ভুগেছেন। ট্র্যাকেও প্রত্যাশিত আলো ছড়াতে না পারায় শুনেছেন বাঁকা মন্তব্য। টোকিওতে বাজিমাতের পর জানালেন, সমালোচনাই ছিল তার কাছে অনুপ্রেরণা।

“চোটের সঙ্গে আমাকে লড়তে হয়েছে। বাজে কথা শুনেছি। আমার কাছে মনোযোগ ধরে রাখা, ছন্দ ধরে রাখা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সব ক্ষতি, হারকে আমি মেনে নিয়েছি এবং সেগুলোকে অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজে লাগিয়েছি।

১০ দশমিক ৭৪ সেকেন্ড টাইমিং করে রুপা পেয়েছেন বেইজিং ও লন্ডন অলিম্পিকসে দ্রুততম মানবীর মুকুট জেতা ফ্রেজার-প্রাইস। টোকিওতে পা রেখেই আগের সাফল্যকে তিনি ‘বড় প্রাপ্তি’ বলেছিলেন। চেয়েছিলেন ‘বিশাল অর্জন’-এর সাফল্যে ভাসতে।

২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকস ও ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকসে মেয়েদের ১০০ মিটারে সেরা হওয়া ফ্রেজার-প্রাইস পরের আসরে সাফল্য ধরে রাখতে পারেননি। ২০১৬ সালের রিও দে জেনেইরোর আসরে পেয়েছিলেন রুপা।

টোকিওতে ১০০ মিটারে সেরা হতে পারলে অলিম্পিকের ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে ব্যক্তিগত কোনো এক ইভেন্টে তিনটি সোনা জয়ের কীর্তি গড়তেন ফ্রেজার-প্রাইস। ওই রেকর্ডেকেই পাখির চোখ করেছিলেন তিনি, কিন্তু হলো না। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে ৯টি সোনা জয়ী এই অ্যাথলেট জানালেন টোকিওর ব্যর্থতা তাকে কাঁদাবে।

“এই মুহুর্তের আবহটা পাগলাটে ধরনের। আমার আবেগ লাগাম ছাড়া। আমি নিশ্চিত, আমি বাড়ি ফিরব এবং ফিরে কাঁদব। অনেকবারই আমি এই পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছি। আজ রাতে যেটা করতে পেরেছি, সেটা নিয়ে আমি আসলেই শিহরিত।”

“আমি রোমাঞ্চিত; কেননা, একজন মা এবং চতুর্থ অলিম্পিকস খেলতে আসা অ্যাথলেট হিসেবে পদকের বেদিতে উঠতে পারা দারুণ সম্মানের ব্যাপার। আশা করি, পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন, মায়েরা, অ্যাথলেটরা, মহিলারা, তারা বুঝবেন, আমরা আরও অনেক কিছু অর্জন করতে পারি।”

এই ইভেন্টের ব্রোঞ্জ পদকও গেছে জ্যামাইকার ঝুলিতে; ১০ দশমিক ৭৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে পেয়েছেন শেরিকা জ্যাকসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *