Uncategorized

২০২১ সালে অতিধনীদের সম্পদ বেড়েছে ৬৪ শতাংশ: ফোর্বস

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: মহামারি কারও জন্য পৌষ মাস, আবার কারও সর্বনাশ হয়ে এসেছে। চরম দুর্যোগের এ সময়েও অতিধনীদের সম্পদ ফুলেফেঁপে উঠেছে। ২০২১ সালে এই অতিধনীদের সম্পদের মূল্য রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে, ৬৪ শতাংশ। অথচ এ সময়ে ১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের কবলে পড়েছে।

প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের ‘বৈশ্বিক অসমতা’ প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি যাচ্ছে ১০ শতাংশ ধনীর ঘরে। অথচ বিশ্বের অর্ধেক মানুষের আয় মাত্র ৮ শতাংশ, বছরে গড়ে ২ হাজার ৮০০ ইউরোর মতো।

আয়ের চেয়ে সম্পদবৈষম্য আরও বেশি। প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে বিশ্বের মোট সম্পদের ৭৬ শতাংশের মালিক ১০ শতাংশ শীর্ষ ধনী। অন্যদিকে বিশ্বের ৫০ শতাংশ মানুষের সম্পদ মাত্র ২ শতাংশ। অথচ দুই শতক আগে অসমতার চিত্র এতটা খারাপ ছিল না। ১৮২০ সালে তাদের হাতে সম্পদ ছিল ৪ শতাংশ। সেই সময় বৈশ্বিক জিডিপির আকার এখনের চেয়ে অনেক ছোট ছিল। ফলে ব্যবধান অতটা প্রকট ছিল না। ১৯৯৫ সালের পর বিলিয়নিয়ার বা শতকোটি ডলারের মালিকদের সম্পদ তিন গুণ হয়েছে, ১ থেকে ৩ শতাংশ।

নারীদের বঞ্চনার মাত্রা এখন অনেক। বৈশ্বিক আয়ের ৩৫ শতাংশেরও কম যাচ্ছে নারীদের ঘরে। ১৯৯০ সালে যা ছিল ৩০ শতাংশ। গত ৩ দশকে বৈশ্বিক আয়ে নারীদের হিস্যা ৫ শতাংশ বাড়লেও এখনো নারী-পুরুষে সমতা আসেনি।

ফোর্বসের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ২০২১ সালে বিলিয়নিয়ার বা শতকোটি ডলারের মালিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৫, যা গত বছরের চেয়ে ৬৬০ জন বেশি। এবার নতুন করে নাম লিখিয়েছেন ৪৯৩ জন। অর্থাৎ প্রতি ১৭ ঘণ্টায় একজন নতুন করে এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক নাম লিখিয়েছেন চীন ও হংকং থেকে, ২১০ জন। আবার এই তালিকা থেকে আগে বাদ পড়া ২৫০ জন আবার তালিকায় ঢুকেছেন। বিলিয়নিয়ারের তালিকায় স্থান পাওয়া মানুষের ৮৬ শতাংশ আগের বছরের চেয়ে বেশি ধনী।

যথারীতি আমাজনের প্রধান নির্বাহী এবারও শীর্ষ ধনীর তালিকায় শীর্ষে আছেন। এ নিয়ে টানা চার বছর তিনি শীর্ষ ধনীদের মধ্যে শীর্ষ ধনী। উল্লিখিত প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১৭৭ বিলিয়ন ডলার বা ১৭ হাজার ৭০০ কোটি ডলার। তার পরেই আছেন বৈদ্যুতিক গাড়ি কোম্পানি টেসলারের প্রধান নির্বাহী ও বর্ণিল চরিত্রের অধিকারী ইলন মাস্ক। তার সম্পদের পরিমাণ ১৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার। চলতি বছরে টেসলা ও আমাজন উভয় কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেকটা বেড়েছে।

সামগ্রিকভাবে এই ২ হাজার ৭৫৫ জন শতকোটি ডলারের মালিকের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন বা ১৩ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার। ২০২০ সালে যা ছিল ৮ ট্রিলিয়ন বা ৮ লাখ কোটি ডলার। অর্থাৎ এই এক বছরে এই অতিধনীদের সম্পদের মূল্য বেড়েছে ৬৩.৭৫ শতাংশ।

বরাবরের মতো এবারও অতিধনীদের তালিকায় মার্কিন নাগরিকদের প্রাধান্য বেশি, ৭২৪ জন। ৬৯৮ জনকে নিয়ে তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে চীন (হংকং ও ম্যাকাওসহ)। শেয়ারের দাম ও মুদ্রার বিনিময়মূল্যের ভিত্তিতে এই তালিকা প্রণয়ন করে ফোর্বস।

অর্থনীতিবিদেরা বলেন, দেশে বিলিয়নিয়ার বা অতিধনীর সংখ্যা বেশি থাকার অর্থ হলো, বৈষম্য বেশি। বড় অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ফোর্বসের এই অতিধনীদের তালিকায় জাপানির সংখ্যা কম, ৪৩ জন। এমনকি ভারতের অতিধনীর সংখ্যা শতাধিক। প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের অসমতা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত এখন বিশ্বের সবচেয়ে অসম দেশগুলোর একটি। ভারতে একদিকে অতিধনীদের বাড়বাড়ন্ত, আরেক দিকে বিপুলসংখ্যক গরিবের বসবাস।

আরো পড়ুন:

বঙ্গবন্ধুর ছবির কপিরাইট দাবি করতে পারবে না কেউ

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *