ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: সিরিয়া ও জর্ডানের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে প্রায় এক দশকের মধ্যে আম্মান থেকে দামেস্কে বিমানের ফ্লাইট যাবে।
চলতি মাসে জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া এবং মিশর একটি চুক্তিতে মিলিত হয়। এই চুক্তি অনুসারে, মিশরের প্রাকৃতিক গ্যাস পাঠানো হবে লেবাননে সিরিয়ার পাইপলাইন দিয়ে। প্রায় ২০ বছর আগে আরব সহযোগিতা প্রকল্পের মাধ্যমে এই পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছিল।
প্রায় এক দশক আগে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরু হলে আরব বিশ্ব দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে।
জর্ডান ও সিরিয়ায় বিমান চালু হওয়ার ফলে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যও শুরু হবে।
জর্ডানের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী মাহাল আলী রাষ্ট্র পরিচালিত মামলাকা টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই সমঝোতার লক্ষ্য আন্তঃদেশীয় ব্যবসা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে সবপক্ষের স্বার্থ হাসিল করা।
জর্ডানের পেত্রা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আম্মানে দু’দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পর বিমান চলাচলের সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সিরিয়া ও জর্ডানের মধ্যে বাণিজ্য, পরিবহণ চলাচল, জ্বালানি এবং কৃষি বিষয়ক সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে ওই বৈঠক হয়।
মামলাকা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, আগামী ৩ অক্টোবর থেকে দামেস্কে বিমানের ফ্লাইট যাওয়া শুরু হবে। এ খবরকে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি স্বাগত জানিয়েছেন।
যেভাবে সিরিয়া সংকট
২০১১ সালে বিশ্বে আরব বসন্তের আগমনে তিউনিসিয়া টালমাটাল। এর ধারায় পরে যোগ দেয় মিসর, লিবিয়া। অনেকে মনে করেছিলেন, সিরিয়ায় হয়তো আরব বসন্তের প্রভাব পড়বে না। কেননা দেশটিতে গত ৪০ বছর ধরে নিজেদের শাসন পাকা করে ফেলেছেন বাসার আল-আসাদের বাথ পার্টি। এ ছাড়া বাশার ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র কায়েমে অনেক সুন্নি মুসলিমেরও সমর্থন ছিল। কিন্তু সিরিয়ায় গল্পটির শুরু একটু ভিন্নভাবে।
ছোট ঘটনা থেকে বিরোধ ছড়িয়ে পড়ে। ২০১১ সালের মার্চের মাঝামাঝি সময় সরকারবিরোধী গ্রাফিতির কারণে চারজনকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে সরকারি বাহিনী। দেশটির ডেরা শহরের এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে সরকারি বাহিনী ব্যাপকভাবে গুলি ছোড়ে। কয়েকজন বিক্ষোভকারী মারা যান। সেই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে।
বাশার আল-আসাদ ট্যাংক, আর্টিলারি এবং হেলিকপ্টার গানশিপ সহকারে দেশব্যাপী অপারেশন চালায়। মাত্র তিন মাসে ২০১১ সালের জুলাই নাগাদ প্রায় ১৬ হাজার বিক্ষোভকারী নিহত হন।
এরপরের ঘটনাপ্রবাহ এতই জটিল, সঠিক হিসাব রাখা মুশকিল। আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ, শহর দখল, দখল থেকে মুক্ত, আবার পুনর্দখলের মধ্য দিয়ে প্রায় ১০ বছর চলে গেছে। এতে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তালিকায় আছেন নিরীহ জনগণ, সেনাসদস্য, বিদ্রোহী এবং সরকারি সমর্থকেরাও। বাস্তুচ্যুত হয়েছে অন্তত ১৫-২০ লাখ মানুষ।
আরো পড়ুন:
গ্রিসকে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ দিচ্ছে ফ্রান্স