প্রচ্ছদ

১০২ বছর বয়সে কোভিড জয় করলেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেনা

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেওয়া ১০২ বছর বয়সী রাশিয়ান নাগরিক নিকোলাই বাগায়েভ করোনার সঙ্গে লড়াই করে জয়ী হয়েছেন। এই রাশিয়ান সেনা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তাঁর ফুসফুসের ৮০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর রাজধানী মস্কোর নিকটবর্তী শহর করোলায়োভের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা নিয়েছেন বাগায়েভ। এক সপ্তাহ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকার পর গত বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।

করোনামুক্তির পর তিনি বলেছেন, ‘সবশেষ ১৯৪১ সালে আমি মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলাম। ওই সময় মস্কোতে চলা যুদ্ধে আমার ফুসফুসের ডান পাশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বয়সে তরুণ থাকায় তখন দ্রুত সেরে উঠি আমি। এবার করোনাভাইরাসে ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু, চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ যাত্রায়ও বেঁচে গেছি আমি, এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা গুটিকয়েক জীবিত সেনাদের মধ্যে বাগায়েভ অন্যতম। গত মে মাসে দেশটির প্যারেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে বসেছিলেন তিনি।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ায় সময় তিনি সামরিক পোশাক ও মেডেল পরেছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘বিষয়টি খুবই কঠিন ছিল, আমাকে বাঁচাতে চিকিৎসকেরা রীতিমতো লড়াই করেছেন। আমি যথাসাধ্য তাদের সাহায্য করেছি, তারাই প্রকৃত হিরো।’ চিকিৎসকেরা জানান, যুদ্ধে বিশেষ ভূমিকা রাখায় গত মাসে বাগায়েভকে সম্মানজনক কর্নেল র‌্যাংক দেওয়া হয়।

বাগায়েভ সোভিয়েত ইউনিয়নের অনেক ঘটনাবহুল অধ্যায় পার করে এসেছেন। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে দুইবার আহত হয়ে মৃত্যুশয্যায় ছিলেন তিনি। তাঁর চিকিৎসক ভ্যালেন্সিয়া রাকিস্তকায়া বলেন, তিনি একজন প্রকৃত যোদ্ধা। মস্কো যুদ্ধের সময়কার লড়াই-সংগ্রামের স্মৃতি তাকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় সুস্থ হতে সাহায্য করেছে।

বিশ্বযুদ্ধের পরে বাগায়েভ কাজাখস্তানে কাজ করেছেন। সেখানে তিনি মহাকাশ স্টেশন বাইকানুর কসমোড্রম নির্মাণে যুক্ত ছিলেন, যেখান থেকে মহাকাশযানে করে ১৯৬১ সালে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে মহাকাশে যান ইউরি গ্যাগরিন।

বাগায়েভ বলেন, তৎকালীন সোভিয়েত নভোচারীদের কাছ থেকে শেখা শ্বাস-প্রশ্বাসের কৌশল তাঁকে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হতে সাহায্য করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *