ধূমকেতু কি?
মহাকাশে মাঝে মাঝে একপ্রকার উজ্জ্বল নক্ষত্রের বা জ্যোতিষ্কের আবির্ভাব ঘটে। যা দেখতে অনেক টা ঝাড়ুর মত। জি বলছি ধূমকেতুর কথা। অনেকেই হয়তো দেখেছেন আবার অনেকেই হয়তো এর নাম শুনেছেন, কিন্তু জানেন না আসলে এই ধূমকেতু কি? কিভাবে তৈরি হয় এই ধূমকেতু।
আজকের আমরা সেই ধূমকেতু নিয়ে আলোচনা করবো।
ধূমকেতু হলো এক ধরনের মহাজাগতিক বস্তু, যা ধুলো, বরফ ও গ্যাসের তৈরি। ধূমকেতু একটি ক্ষুদ্র বরফাবৃত সৌরজাগতিক বস্তু যা সূর্যের খুব নিকট দিয়ে পরিভ্রমণ করার সময় দর্শনীয় একটি পাতলা, ক্ষণস্থায়ী বায়ুমন্ডল এবং কখনও লেজও প্রদর্শন করে ।
সূর্যের কাছাকাছি এসে পড়লে তার একপাশে লম্বা আলোর রেখার মতো দেখা যায়, এই আলোটিকে লেজ বা ঝাড়ু বলা হয়ে থাকে। পানি, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং আরও কিছু যৌগ বাষ্পীভূত হয়ে তৈরি করে এই লেজ। ধূমকেতু সূর্যের যত কাছাকাছি থাকবে, ততই এর লেজ তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
আবার এই ধুমকেতু সূর্য থেকে যত দূরে যায় ততই ঠান্ডা হয়ে যায় এবং তার মিলিয়ে যায় । আবার ঘুরে সূর্যের কাছে এলে তার লেজ তৈরি হয় তখন আমরা রাতের আকাশে তাকিয়ে ধুমকেতু হিসেবে দেখতে পাই ।
ধূমকেতুর লেজ প্রস্থে কয়েকশ মিটার থেকে দশ কি.মি. এবং লেজ দৈর্ঘ্যে কয়েকশ কোটি কি.মি. পর্যন্ত হতে পারে ।
মহাকাশে ধূমকেতুর সংখ্যা কত?
নাসার তথ্য অনুযায়ী, মহাকাশে ধূমকেতুর সংখ্যা ৩ হাজার ৭৪৩টি। একটি ধূমকেতুর পর্যায়কাল কয়েক বছর থেকে শুরু করে কয়েকশ’ হাজার বছর পর্যন্ত হতে পারে।
আজ থেকে হাজার বছর পূর্বেও মানুষ এই ধূমকেতু দেখত বলে জানা যায়। ব্যাবিলন, চীন এবং ইউরোপের পর্যবেক্ষকরা তখন হ্যালির ধূমকেতু দেখেছেন বলে, নথিপত্রে তা লিখে রেখেছেন।
হ্যালির ধূমকেতু আবিস্কার করেন কে?
ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী ‘এডমন্ড হ্যালি’ সর্বপ্রথম এই ধূমকেতু সূর্যকে কেন্দ্র করে একবার ঘোরার সময়কাল বের করেন। তার নামানুসারেই এই ধূমকেতুর নামকরণ করা হয় হ্যালির ধূমকেতুর
হ্যালির ধূমকেতুর লেজ লম্বায় এক লাখ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে, অথচ এর নিউক্লিয়াস আকারে অনেক ছোট, যেটি লম্বায় প্রায় ১৫ কিলোমিটার, প্রস্থে ও পুরুতে ৮ কিলোমিটার।
হ্যালির ধূমকেতু কবে দেখা যাবে?
সর্বশেষ ১৯৮৬ সালে বিজ্ঞানীরা আকাশযান ব্যবহার করে হ্যালির ধূমকেতু পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পান। প্রতি ৭৫ বছর পরপর খালি চোখে ধূমকেতু দেখা যায় পৃথিবী থেকে। এরপর ২০৬১ সালের ২৮ জুলাই আবার হ্যালির ধূমকেতুটি দেখা যাবে বলে বিজ্ঞানীরা ধারনা পোষন করেছেন।