নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল শীর্ষ বৈঠকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে রেল সংযোগ পুনরায় চালু হলো। বেলা সাড়ে ১১টায় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর এই বৈঠক শুরু হয়। পরে দুই নেতার ভাষণের পরপরই দুপুর ১২টার দিকে ৫৫ বছর পর এই রেলসংযোগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, ১৯৬৫ সালের আগে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথে রেল যোগাযোগ ছিল। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর সেটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সীমান্ত এলাকার প্রায় ৯ কিলোমিটার পথে রেললাইন তুলে নেওয়া হয়। ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় দুই দেশের বন্ধ রেল সংযোগগুলো পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি পথও ছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ অংশের ৯ কিলোমিটারে ব্রডগেজ রেললাইন ও অবকাঠামো নির্মাণে ৮০ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়। অন্যদিকে, ভারতের অংশে সাড়ে তিন কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রকল্প নেয় ভারতের সরকার।
ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে দর্শনা হয়ে যাত্রীবাহী মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালু আছে। খুলনা থেকে বেনাপোল হয়ে কলকাতায় চলাচল করে বন্ধন এক্সপ্রেস। তবে করোনা সংক্রমণের কারণে দুই পথেই যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ি হয়ে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন চালুর বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। আজ সেই সংযোগ চালু হলো।
আজকের বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক যেভাবে এগোচ্ছে, তা প্রশংসনীয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ভাষণে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে বরাবরই প্রাধান্য দেয় ভারত।
গত ১০ ডিসেম্বর নীলফামারীতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় এই রেলপথ উদ্বোধনের প্রস্তুতিমূলক সভা। ওই সভায় রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম জানান, ১৭ ডিসেম্বর উদ্বোধনের পর থেকে এ পথে দুই দেশের মধ্যে আপাতত পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। আগামী বছরের ২৬ মার্চ থেকে এ পথে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আজ শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের আগে বাণিজ্য, জ্বালানি, কৃষিসহ সাত খাতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও ভারত সাতটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সমঝোতা স্মারকগুলো সই হয়।
সই হওয়া সমঝোতা স্মারকগুলো হচ্ছে- হাইড্রোকার্বনে সহযোগিতার বিষয়ে রূপরেখা, কৃষি খাতে সহযোগিতা, নয়াদিল্লি জাদুঘরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের সহযোগিতা, হাতির সুরক্ষায় অভয়ারণ্য নিশ্চিত করা, হাই ইমপ্যাক্ট কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প চালু, বাংলাদেশ-ভারত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফোরামের ট্রাম্প অব রেফারেন্স এবং বরিশালে সুয়ারেজ প্রকল্পের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *