স্বাস্থ্য

হরিতকীর পরিচিতি ও ভেষজ গুণাবলি

হরিতকী গাছ সাধারনতঃ ২০-২৫ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। পাতা সরল, প্রতিমুখ, ডিম্বাকার বা আয়তাকার। ফাল্গুন-চৈত্র মাসে পাতা ঝরে গিয়ে আবার অল্পদিনের মধ্যে নতুন পাতা জন্মায়। পুষ্পদন্ডের চারদিকে নাকচাবির মত সাদা বা হলুদ রংয়ের উগ্র গন্ধবিশিষ্ট ফুল হয় এবং পরবর্তীতে ফল আসে। অগ্রাহায়ণ ও পৌষমাসে ফল পরিপুষ্ট হয়ে আপনা-আপনি পড়ে যায়। বস্তুতঃ তখনই এর সংগ্রহকাল। পরিপুষ্ট হরিতকীর উপরের অংশ বাদামী রংয়ের এবং উন্নত শিরা বিশিষ্ট।

আরো পড়ুন: অ্যাভোকাডোর আশ্চর্যজনক গুণ যা অবশ্যই কাজ করবে

প্রচলিত নামঃ হরিতকী

ইউনানী নামঃ হালীলা

আয়ুর্বেদিক নামঃ হরিতকী

ইংরেজি নামঃ Chebulic Myrobalan, Ink nnt, Gall nut

বৈজ্ঞানিক নামঃ Terminalia chebula (Gaertn.) Retz.

পরিবারঃ Combretaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ

ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্রগ্রাম ও পার্বত্য চট্রগ্রামের বনাঞ্চলে ও শালবনে পাওয়া যায়।

আরো পড়ুন: শতমূলী গাছ শতমূলীর পরিচিতি, উপকারিতা ও ভেষজ গুণাবলি

রোপনের সময় ও পদ্ধতিঃ

বীজ হতে এর বংশ বিস্তার করা হয়। ডিসেম্বর হতে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহের ৭-১০ দিন পর রোদে শুকিয়ে বীজ হিসাবে ৩০-৪০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষন করা যায়। বীজ সংগ্রহের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে মাটি ও গোবর ৩:১ অনুপাতে মিশ্রিত বীজতলায় লাগাতে হয়। বীজকে ৪৮ ঘন্টা পানিতে ভিজানোর পর লাগালে ৫০% বীজ গজায়। সম্পূর্ণ ফল ৪৮ ঘন্টা পানিতে ভিজানোর পর ১০% ঘন সালফিউরিক এসিডে ২০ মিনিট রেখে এবং পরে ভাল করে ধুয়ে ফলের আবরণ ফেলে লাগালে ৬৮% বীজ অঙ্কুরিত হয়। চারা গজানোর ৩০-৪৫ দিনের মধ্যে পলিথিন ব্যাগে মাটি ও গোবর ৩:১ অনুপাতে মিশিয়ে চারা উঠিয়ে রাখতে হয়। ৪-৫ মাস বয়সের চারা মাঠে লাগানোর উপযুক্ত হয়।

রাসায়নিক উপাদানঃ

ফল ও ছালে ট্যানিন, স্টেরয়ডীয় ট্রাইটার্পিন, ফ্ল্যাভোনয়েড দ্রব্য, রজন, শর্করা, প্রোটিন ও এমিনো এসিড বিদ্যমান।

ব্যবহার্য অংশঃ

ফল বা ফলত্বক ।

গুনাগুনঃ হজমকারক, কোষ্ঠ পরিষ্কারক, মস্তিষ্কের শক্তিদায়ক, দৃষ্টিশক্তি বর্ধক, বলকারক, জীবনীশক্তি বৃদ্ধিকারক এবং পিপাসা নিবারক। রক্ত আমাশয়, পেটফাঁপা, উদরাময়, বমন, প্লীহা ও যকৃতের বিভিন্ন রোগে অত্যন্ত ফলপ্রদ।

বিশেষ কার্যকারিতাঃ

পাকস্থলীর শক্তিবর্ধক, হজমকারক, পেটফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিণ্যে উপকারী।

রোগ অনুযায়ী ব্যবহার পদ্ধতিঃ

রোগেরনামঃ কোষ্ঠকাঠিণ্যে
ব্যবহার্য অংশঃ খোসাচূর্ণ
মাত্রাঃ ৫-৬ গ্রাম.

ব্যবহার পদ্ধতিঃ

সমপরিমাণ চিনি মিশিয়ে রাত্রে গরম পানিসহ সেব্য।

রোগেরনামঃ হজমশক্তি বৃদ্ধি ও পেটফাঁপায়
ব্যবহার্য অংশঃ খোসাচূর্ণ
মাত্রাঃ ৫-৬ গ্রাম
ব্যবহার পদ্ধতিঃ সামান্য পরিমাণ বিট লবণ বা কালো লবণ মিশিয়ে আহারের পর দৈনিক ৩ বার সেব্য।

সতর্কতাঃ

নির্দিষ্ট মাত্রার অধিক সেবন করা সমীচী নয়। এতে অন্ত্রনালীর ক্ষতি হতে পারে।

তথ্যসূত্রঃ MyOrganicBD

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *