জাতীয়

সড়কের বাঁক যেন মরণফাঁদ এখন

সড়কের বাঁক যেন মরণফাঁদ এখন

সড়কের বাঁক যেন মরণফাঁদ এখন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনার ৩৫ শতাংশই ঘটে বাঁকগুলোতে।

এ অবস্থায় বিপজ্জনক বাঁক চিহ্নিত করে গতিরোধক এবং প্রয়োজনে দুই পাশের গাড়িই চোখে পড়বে এমন আয়না স্থাপনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু চালকদের সচেতনতা বৃদ্ধির কথা বলেই দায় সারছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ।

মিরপুর বেড়িবাঁধ সড়ক। ব্যস্ত নগরীর যানজট এড়াতে অনেকেই ব্যবহার করেন এই বিকল্প পথ। তবে এই পথের একটু পরপর বিপদজ্জনক বাঁক। তীব্র গতিতে ছুটে আসছে গাড়ি, গতি না কমিয়েই ক্রস করছে এমন ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক।

সড়ক কিংবা ফ্লাইওভার, সব ক্ষেত্রেই বাঁকগুলো যেন মরণফাঁদ। হরহামেশাই ঘটছে দুর্ঘটনা। তবু রাস্তায় নেই তেমন কোনো নিরাপত্তাব্যবস্থা।

এ বিষয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধে কথা হয় এক মোটরবাইকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ রাস্তায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। মোড়গুলোতে দেখা যায় না বিপরীত দিক থেকে কোন গাড়ি আসছে। আর প্রচণ্ড গতিতে এসব গাড়ি আসে।

অপর এক পথচারী বলেন, এমন কোনো সপ্তাহ নেই, এখানে বড় দু-একটি দুর্ঘটনা ঘটছে না। ট্রাক-বাস বা মোটরসাইকেলই দুর্ঘটনার শিকার বেশি হয়। কারণ, বাঁকের কারণে একপাশের গাড়ি অন্যপাশ থেকে দেখা যায় না।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যানুযায়ী, সড়কের ৩৫ শতাংশ দুর্ঘটনাই ঘটে বিপজ্জনক বাঁক ও ক্রসিংয়ে।

এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন, সড়কে এমন বাঁক কিংবা সংযোগগুলোতে অপর পাশের গাড়ি তেমন চোখে পড়ে না। সে ক্ষেত্রে বিপজ্জন মোড়গুলোতে গতিনিরোধক এবং প্রয়োজনে দুপাশের গাড়িই চোখে পড়বে এমন আয়না স্থাপন করার পরামর্শ দেন তারা।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক সাইফুন নেওয়াজ বলেন, ‘আমাদের দেশের রাস্তার বাঁকগুলোতে গাছপালার জন্য এমনিতেই দেখতে অসুবিধা হয়, সতর্কতামূলক চিহ্নও পর্যাপ্ত থাকে না, পাশাপাশি বাঁকে রাস্তা যথেষ্ট প্রশস্তও থাকে না। ফলে সামগ্রিকভাবে বাঁকগুলোতে নানামুখী দুর্ঘটনার প্রবণতা বেড়ে যায়।

এ থেকে পরিত্রাণ পেতে বাঁকগুলোকে গাছ লাগানো যাবে না, পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক চিহ্ন স্থাপন করতে হবে, বাঁকে যেন কোনোভাবেই ওভারটেকিং না করা হয়, তার নজরদারি করতে হবে। আর কোনো কিছুই যদি করা সম্ভব না হয়, তবে অন্তত আয়না স্থাপন করতে হবে যেন বাঁকে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়িগুলো দেখা যায়।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বলছে, মোড়গুলোতে গাড়ি ধীরে চালাতে সচেতনতা সৃষ্টিতে নিয়মিতই কাজ করছে তারা।

বিআরটিএর রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক, শেখ মোহাম্মদ মাহবুব ই রাব্বানী বলেন, ‘গাড়ি চালানোর নিয়ম থাকে, মোড়ে গাড়ির গতি কমাতে হবে, ওভারটেক করা যাবে না ইত্যাদি নিয়ে আমরা নিয়মিত সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করি। এ ছাড়া পুলিশও নিয়মিতভাবে স্পিডগান দিয়ে গতি পরীক্ষা ছাড়াও অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে।’

রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, ২০২২ সালের মার্চ মাসেই ৪৫৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৮৯ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *