নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: মানুষ সহযোগিতা না করলে দেশের করোনা পরিস্থিতি ‘ঝুঁকিমুক্ত’ হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, করোনার থাবা থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। এ নিয়ে কোনো আপোস হতে পারে না। লকডাউন থাকুক, না থাকুক-স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।
করোনা প্রতিরোধে সকলের সহযোগিতা কামনা করে করোনা প্রতিরোধে গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, করোনা ভাইরাস ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে জানেন না দেশে এমন মানুষের সংখ্যা নেই বললেই চলে। কিন্তু করোনা থেকে রক্ষার্থে সরকার ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে নির্দেশিত পরামর্শসমূহ পালনে মানুষের মধ্যে উদাসীনতা ও অসচেতনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যা দেশের করোনা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটাতে পার। লকডাউন থাকুক, না থাকুক-স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।
সামান্য অবহেলায় জীবনঝুকিঁর বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম আলমগীর হোসেন ধূমকেতু ডটকমকে বলেন, সারা দেশে করোনা সংক্রমণ স্থিতিশীল রয়েছে। তা না হলে সংক্রমণ আর মৃত্যু আরও বেশী হত। তবে ১ আগস্ট থেকে শিল্প প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দরুণ হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে ছুটছে তাতে এই সপ্তাহ হতে পারে বেশ ক্রিটিক্যাল। এরপরই ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকতে পারে। গণপরিবহন খুলে দিলে অবশ্যই জনগণকে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকে লকডাউনের ফলে সুফল আসেনি বলে মন্তব্য করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো লকডাউনের আগে যেভাবে করোনার সংক্রমণ প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছিল তাতে লকডাউন না দিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতো। লকডাউন দেয়ার ফলে অধিকাংশ মানুষ ঘরে থেকেছে। ফলে বর্তমানে করোনার সংক্রমণ ২৫ থেকে ২৭ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।
মাস্ক পরিধানের ব্যাপারে তিনি বলেন, অনেকেই মাস্কের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে জানেন না। তারা নানা অজুহাতে মাস্ক পরলেও খুলে থুতনির নিচে বা কানের পাশে ঝুলিয়ে রাখেন। কিন্তু সার্জিক্যাল মাস্ক সব সময়ই পরে থাকা যায়। অনেকে মনে করেন মাস্ক নিজের জন্য পরেন। আসলে মাস্ক অন্যকে রক্ষার জন্যও পরা উচিত।
করোনার সংক্রমণ রোধে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য বিএসএমএমইউয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লকডাউন কোনো স্থায়ী সমাধান নয়। তাছাড়া প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় সেভাবে পালিত হয় না। সুতরাং যে কোনো মূল্যে শতভাগ মানুষকে মাস্ক পরতে বাধ্য করতে হবে।
আইইডিসিআর’র উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মুস্তাক হোসেন ধূমকেতু ডটকমকে জানান, মানুষ সহযোগিতা না করলে দেশের করোনা পরিস্থিতি ‘ঝুঁকিমুক্ত’ হবে না। করোনার থাবা থেকে জীবন ও জীবিকা রক্ষা করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে। এনিয়ে কোনো আপোস হতে পারে না।