স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্যবিধি পালন ও গণটিকার উপর জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা

নিখিল মানখিন, ধূমকেতু ডটকম: করোনার ঝুঁকিপূর্ণ সংক্রমণরোধে রোগী শনাক্তকরণ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যবিধি পালন এবং গণটিকা চালু করার উপর জোর দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এই তিনটি কর্মূসূচী যথাযথ পালন করলে দেশের করোনা পরিস্থিতির ব্যাপক উন্নতি ঘটবে। রোগী শনাক্তকরণ বৃদ্ধি ও গণটিকা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। স্বাস্থ্যবিধি পালনের সফলতা নির্ভর করছে মানুষের ইতিবাচক আচরণ ও সচেতনতার উপর।

প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার নিত্য নতুন রেকর্ড গড়ছে। পরীক্ষিত নমুনার বিপরীতে দৈনিক করোনা রোগী শনাক্তের হার ২৮ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে উঠানামা করছে, যা দেশে ঝুঁকিপূর্ণ  করোনা পরিস্থিতির চিত্র দেখিয়ে দেয়। জনসাধারণ সচেতন ও প্রতিরোধবিধি না মারলে পরিস্থিতি আরো খারাপের দিকে যাওয়ার শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। তারা বলছেন, করোনা মোকাবেলায় সবার আগে সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধানত ৩টি পদ্ধতি মেনে চলার কথা জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া ধূমকেতু ডটকমকে জানান, করো্না সংক্রমণরোধে নানা কর্মূসূচী গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে সরকার। তবে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে। গণটিকা চালু হলে স্বস্তি পাবে দেশের মানুষ। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠিন হয়ে পড়বে বলে জানান ডা. অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া।

সংক্রমণরোধের উপায়সমূহের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন ধূমকেতু ডটকমকে জানান, করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা, সবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং টিকাদানের উন্নতি ঘটাতে হবে।  তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা, যার মাধ্যমে একটা ব্যবস্থাপনার আওতায় আনতে হবে সবাইকে। এ ক্ষেত্রে আক্রান্তদের মধ্যে হাসপাতালে থাকা রোগীরা চিকিৎসার মধ্যে থাকছে। বাসায় থাকা রোগীদের নিতে হবে টেলিমেডিসিনের আওতায়, যাতে বিপদ সংকেত অনুযায়ী হাসপাতালে যেতে পারে। এ ছাড়া বাড়িতে অবস্থান করা করোনা আক্রান্তদের আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে জীবিকা নির্বাহ নিয়ে সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের ঘরে রাখতে সহায়তা দিতে হবে।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে ডা. মুস্তাক হোসেন বলেন, সবাইকে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে আরো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে, এর কোনো বিকল্প নেই এই মুহূর্তে। স্বাস্থ্যবিধির বিষয়টি দেখতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর বা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বরদের নেতৃত্বে এলাকাভিত্তিক কমিটি করা যেতে পারে। তবে প্রাতিষ্ঠানিক কাজে নিয়োজিতদের তদারকির দায়িত্ব নিতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে।

তিনি আরো বলেন, সবাইকে গণটিকাদানের আওতায় আনা। টিকা পাওয়ার পরই যেন সবার টিকাদান নিশ্চিত করা যায়। জনস্বাস্থ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে এই তিনটি পদ্ধতি মানলে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টসহ যে কারণেই সংক্রমণ বাড়ুক না কেন, অবশ্যই তার রাশ টানতে হবে। অন্যথায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে জানান ডা. মুস্তাক হোসেন।

রাজধানীর শ্যামলীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টিবি হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ডা. আবু রায়হান ধূমকেতু ডটকমকে জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিকল্প নেই। দেশে করোনা টিকা কর্মূসূচী অব্যাহত রয়েছে। গণটিকা চালু করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *