দক্ষিণ আফ্রিকায় স্বামীর হাতে খুন হওয়া শান্তা শিকদারের মরদেহ দেশে পৌঁছেছে। শুক্রবার রাত ৪টার দিকে শান্তার মরদেহ বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। পরে পরিবারের সদস্যরা শান্তার মরদেহ নিয়ে মির্জাপুর থানায় আসে। সেখানে সুরতহাল শেষে ময়নাদতন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

শান্তা শিকদার এ উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের থলপাড়া গ্রামের আব্দুস ছালাম শিকদারের মেয়ে।

শান্তা শিকদারকে হত্যার দায়ে গত সোমবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার পুমালাঙ্গা প্রদেশের লাইডেনবার্গ শহরের পাশের একটি জঙ্গল থেকে স্বামী সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা পুলিশ। এর আগে রবিবার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে সুমন নিজ বাসায় স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের খোকা মাস্টারের ছেলে সুমন মিয়া আট বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাড়ি জমান। সেখানে লাইডেনবার্গ শহরে ব্যবসা শুরু করেন। এক বছর আগে থলপাড়া গ্রামের চাচাতো মামা আব্দুস ছালাম শিকদারের মেয়ে শান্তা শিকদারকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন সুমন। ছয় মাস আগে শান্তাকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যান তিনি।

তাদের দাবি, দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার কয়েক দিন পর থেকে সুমন টাকার জন্য শান্তাকে চাপ দিতে থাকেন। এতে তাদের দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। শান্তা বিষয়টি তার বাবাকে জানালে বিভিন্ন সময় সাত লাখ টাকা দেওয়া হয়। রবিবার (২৮ আগস্ট) বাংলাদেশ সময় রাত ১টার দিকে স্বামী সুমন মিয়া নিজ বাসায় স্ত্রী শান্তাকে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে খুন করে পালিয়ে যান।

শান্তার বাবা আব্দুস ছালাম শিকদার বলেন, ‘টাকার জন্য আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে অতি কষ্টে সুমনকে সাত লাখ টাকা দিয়েছিলাম। যে টাকা তার ছোট ভাই আমার বাড়িতে এসে নিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় হত্যা মামলা হলেও আমি বিচার পাব না। কারণ ওই দেশে আমার পরিবারের কেউ নেই। দেশে মামলা করার জন্য আমার মেয়ের মরদেহ দেশে ময়নাতদন্তের অনুমতি দিয়েছি। ’

মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালে মাসুদ করিম বলেন, ‘শান্তার মরদেহের সুরতহাল শেষে টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজন চাইলে মামলা করতে পারবেন। ’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *