স্বামীকে দুলাভাই পরিচয় দিতেন নেত্রী মিম
প্রতারণার কৌশল হিসেবে মিম স্বামীকে দুলাভাই পরিচয় দিতেন বলে অভিযোগ মামলার বাদীর। মিম পাবনা পৌর যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি।
গত সোমবার তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা করেন মনিরুজ্জামান ওরফে বাবু। এর পর পাবনা সদর থানা-পুলিশের সহযোগীতায় গতকাল বুধবার সকালে পাবনা শহরের মাসুম বাজার এলাকার বাসা থেকে মিম ও ওবাইদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করে রাজধানীর গুলশান থানা-পুলিশ।
‘প্রতারণা মামলায় গতকাল সকালে তাঁদের পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগ নেত্রী মিমকে। গ্রেপ্তার মিম পাবনা পৌর সদরের পুরোনো মাসুম বাজার এলাকার মিন্টু মোল্লার মেয়ে। তাঁর স্বামী ওবাইদুল্লাহ একই এলাকার বাসিন্দা।
প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে পাবনা পৌর যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি মিম খাতুন ওরফে আফসানা মিম (২৬) ও তাঁর স্বামী ওবাইদুল্লাহকে (৩৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার বাদী মনিরুজ্জামান ওরফে বাবু (৩২) পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা হাটপাড়া গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। বর্তমানে রাজধানীর শাহজাহানপুরে বসবাস করেন। পেশায় তিনি ঠিকাদার ও ব্যবসায়ী। গুলশান-২-এ তাঁর এবিএস নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ফেসবুকের মাধ্যমে মিমের সঙ্গে মনিরুজ্জামানের পরিচয়। এর কিছুদিন পর ওবাইদুল্লাহ নামের এক ব্যক্তিকে দুলাভাই হিসেবে তাঁর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন মিম। পরে পাবনা শহরের রবিউল মার্কেটে ব্যবসার কথা বলে এবং সেই ব্যবসায়ের অংশীদার রাখার আশ্বাসে বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছ থেকে ১৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৯০ টাকা ধার নেন মিম ও ওবাইদুল্লাহ। গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে এসব টাকা ধার নেন তাঁরা।
মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বাসের কারণে দলিল ছাড়া লেনদেন হলেও পরে দলিল করতে চাইলে তাঁরা টালবাহানা শুরু করেন। সর্বশেষ ১৬ ফেব্রুয়ারি টাকা ফেরত চাইলে তাঁরা পাওনা টাকা ফেরত দেবেন না বলে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।’
মনিরুজ্জামান আরও বলেন, ‘বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে জেনেছি দুলাভাই বলে পরিচয় দিলেও মূলত মিমের চতুর্থ স্বামী ওবাইদুল্লাহ। তাঁরা দুজন মিলে পরিকল্পিতভাবে আমাকে প্রতারণার জালে ফেলে। এর আগেও অনেকের সঙ্গে এমনটা করেছে। উপায় না পেয়ে একপর্যায়ে আমি পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করি। আশা করছি, আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে এ বিষয়ে সুষ্ঠু বিচার পাব।’
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘প্রতারণার মামলায় আমরা তাঁকে গ্রেপ্তার করেছি। আসামি কোন দল করেন, সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। এজাহারভুক্ত আসামি এটাই তাঁর বড় পরিচয়। আসামির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এ বিষয়ে পাবনা জেলা যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী আরেফা খানম শেফালী বলেন, ‘আফসানা মিম ওরফে মিম খাতুন পাবনা পৌর যুব মহিলা লীগের সহসভাপতি। তাঁর প্রতারণা ও গ্রেপ্তারের বিষয়টি জেনেছি। এ জন্য দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাঁকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে পৌর যুব মহিলা লীগ।’
ডেস্ক রিপোর্ট/