স্ট্রোক, হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ভুল সময়ে খাবার খেলে
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাসের চেয়েও মারাত্মক হতে পারে ভুল সময়ে খাবার গ্রহণের প্রবণতা আর স্ট্রোক, হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ভুল সময়ে খাবার খেলে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন আর খাদ্যাভ্যাসে বাংলাদেশে দিন দিন বাড়ছে হৃদ্রোগ আর স্ট্রোকের রোগীর সংখ্যা।
শরীরের সঙ্গে খাবারের পারস্পরিক সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে নিবিড় সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাসে সাল্ক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সচিন পাণ্ডা।
তিনি বলেন, শরীর গ্রহণ করা খাবার থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করতে কমপক্ষে ১০ ঘণ্টা সময়ের প্রয়োজন। তাই এ হিসাবের ব্যতিক্রম হলেই ঘটতে পারে বিপত্তি।
এদিকে সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। উদ্বেগের বিষয় হলো ২৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে গড়ে একজন করে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।
সম্প্রতি ‘নিউট্রিয়েন্টস’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ তথ্য। সেখানে বলা হয়েছে হৃদ্রোগ আর স্ট্রোকের সংখ্যা বাড়ছে ভুল সময়ে খাবার গ্রহণের অভ্যাসের কারণে।
ভুল সময়ে খাবার গ্রহণ আমাদের শারীরিক নানা জটিলতা সৃষ্টি করে। যেমন, পেটে গ্যাস, অ্যাসিডিটি, মাথা ব্যথা, বদ হজম ইত্যাদি। কিন্তু রাতের খাবার গ্রহণ ভুল সময় হলে তা আপনার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের মতো জটিল রোগেরও।
এই গবেষণা কাজ পরিচালনা করা হয় তিনটি ভাগে। প্রথম ভাগে রয়েছে সন্ধ্যা ৮টার আগেই রাতের খাবার খেয়ে নেন, দ্বিতীয় ভাগে রাতের খাবার খাওয়ার কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই এবং তৃতীয় ভাগে রয়েছে সন্ধ্যা ৮টার পরে রাতের খাবার গ্রহণকে।
গবেষকরা পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পেলেন, যাদের রাতের খাবার খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই তাদের মধ্যে স্ট্রোকে মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি রাত ৮টার আগেই রাতের খাওয়া সেরে নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে হৃদ্রোগের ঝুঁকি অনেক কম।
এর কারণ হিসেবে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস বলছে, অধিক রাতে আমাদের হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় খাবার গ্রহণে হঠাৎই বেড়ে যেতে পারে উচ্চ রক্তচাপ।
এই উচ্চ রক্তচাপ আমাদের ধমনীগুলোকে দুর্বল করে তোলে। যার ফলে মতিষ্ক ও হার্টে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। আর এতেই আপনার জীবনে ঘটতে পারে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো দুর্ঘটনা। তাই সকাল ৭টার মধ্যে সকালের নাশতা, দুপুর ২ টার মধ্যে দুপুরের খাবার এবং রাত ৮ টার আগেই রাতের খাবার গ্রহণ করার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, বিবিসি।