নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: মানুষের জীবন রক্ষায় বহুল ব্যবহৃত মন্টিলুকাস্ট, ওমিপ্রাজল ও সেফিক্সিম গ্রুপের নকল ওষুধ তৈরি করে বিক্রি করত একটি চক্র। আর এ সব নকল ওষুধের কারণে কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং শ্বসনতন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে প্রাণহানি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
নকল ওষুধ তৈরির এই চক্রের ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের গোয়েন্দার (ডিবি) একটি দল।
গ্রেফতাররা হলেন- ফয়সাল মোবারক, নাসির, ওহিদুল, মামুন, রবিন, ইব্রাহিম, আবু নাঈম ও ফয়সাল। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় নকল ওষুধ তৈরির মেশিন ও বিপুল পরিমাণ ওষুধ। তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা করা হয়েছে।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের সেফ-৩ নামের নকল ওষুধের ১৬ বক্স, যাতে ট্যাবলেটের পরিমাণ ২২৪ পিস। এছাড়া সেকলো-২০ নামের ১৬ বক্স নকল ওষুধ, যাতে রয়েছে ১৯২০ পিস ট্যাবলেট। আর ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের মনটেয়ার ১০ নামের নকল ওষুধের ২২ বক্স, যাতে ট্যাবলেটের পরিমাণ ৬৬০ পিস।
আরও রয়েছে- জেনিথ ফার্মাসিউটিক্যালসের ন্যাপ্রোক্সেন প্লাস নামের নকল ওষুধের ৮০০ বক্স, যাতে রয়েছে ২৪০০০ পিস ট্যাবলেট। দি একমি ল্যাবরেটরিসের মোনাস ১০ নামের নকল ওষুধের ৪০ বক্স, যাতে ১২০০ পিস ট্যাবলেট রয়েছে। এছাড়া রয়েছে নকল ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট।
সোমবার (১৬ আগস্ট) ডিবি কার্যালয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, একটি অসাধু চক্র এ অতিমারিতে নকল ওষুধ বাজারজাত করছে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানী, সাভার ও পিরোজপুরের নেছারাবাদ বিসিক শিল্প এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে এ প্রতারক চক্রের ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি প্রধান আরও বলেন, চক্রের মূলহোতা গ্রেফতার ফয়সালের নামে সাভার ও ফিরোজপুরে দুটি কারখানা রয়েছে। সে ভুয়া ড্রাগ লাইসেন্স নিয়ে নকল ওষুধ তৈরি করছিল। ফয়সাল মূলত আতিয়ার নামে এক কেমিস্ট্রের কাছ থেকে বাজারে ব্যাপক প্রচলিত নামিদামি ব্র্যান্ডের ওষুধের ফর্মুলা ও কম্পোজিশন নিত। এরপর মিটফোর্ডের কেমিক্যাল ব্যবসায়ী মুহিবের কাছ থেকে কেমিক্যাল সংগ্রহ করে এসব ওষুধ তৈরি করত তার কারখানায়। নকল ওষুধ তৈরির পর মিটফোর্ডের কয়েকটি গ্রুপ এসব নকল ওষুধ বাজারজাত করত।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার নাঈম নকল ওষুধের জন্য সব প্যাকেট তৈরি করত। আর গ্রেফতার ফয়সাল, নাসির, ওহিদুল, মামুন, রবিন, ইব্রাহিম, আবু নাঈম, ফয়সাল ও তাদের সহযোগীরা তৈরিকৃত এ সব নকল ওষুধ বাজার মূল্যের চেয়ে নামমাত্র দামে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করত। তারা নকল ওষুধ প্রেরণ করত ইউএসবি কুরিয়ার, এসএ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ারসহ বিভিন্ন কুরিয়ারের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, নন ফার্মাসিউটিক্যালস গ্রেডের এসব কেমিক্যাল সেবনের ফলে মানুষের কিডনি, লিভার, হৃদযন্ত্র এবং শ্বসনতন্ত্রে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।