‘কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, রিমেম্বার দ্য নেম’- ইয়ান বিশপের কণ্ঠে এই বজ্র চিৎকার যখন স্টেডিয়ামজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন ২২ গজে মাথায় হাত দিয়ে বসে আক্ষেপে পুড়ছিলেন ইংলিশ ক্রিকেটার বেন স্টোকস।
নিজের সুদূরতম কল্পনাতেও হয়তো স্টোকস ভাবেননি, এই ম্যাচ তার হাত ধরেই হার দেখবে ইংল্যান্ড। বলছি ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালের কথা। যেখানে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওভারে জিততে হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজদের করতে হতো ১৯ রান।
স্ট্রাইকে ছিলেন ক্যারিবিয়ান ব্র্যাথওয়েট। শেষ ওভারে স্টোকস যখন বল হাতে নেন সেই মুহূর্তে এই ক্যারিবিয়ানের রান ছিল ৬ বলে মাত্র ১০ রান। পুরো বিশ্বকাপে ফর্মে না থাকা ব্র্যাথওয়েট স্টোকসের ওভার থেকে ১৯ রান তুলতে পারবে বলে মনেই হচ্ছিল না।
কিন্তু স্টোকসকে টানা ৪ বলে ৪ ছয় হাঁকিয়ে ঠিকই জয় তুলে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্টোকসও ভেঙে পড়েন চরম হতাশায়। তবে সেই হতাশা কাটাতে আরেক ফাইনালের মঞ্চে জয়ের নায়ক হওয়ার পথই বেছে নিয়েছেন স্টোকস।
২০১৯ সালে ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানো স্টোকস এবার ২০২২ সালে ইংলিশদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জেতালেন। যেখানে ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা বড় মঞ্চে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হচ্ছিলেন সেখানে ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলে জয়ের নায়ক স্টোকস।
মেলবোর্নে আজ (১৩ নভেম্বর) স্টোকসের ইনিংসে ভর করে ৫ উইকেটের জয় তুলে নিয়েছে ইংল্যান্ড। টসে হেরে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান তোলে পাকিস্তান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
পাকিস্তানকে ফাইনালে হারিয়ে শিরোপা জেতানো ম্যাচে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ৫২ রান করেছেন স্টোকস। পুরো ম্যাচে ফিফটি ছিল এই একটিই। এটি আবার স্টোকসের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। এর আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে স্টোকসের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস ছিল অপরাজিত ৪৭ রান।
বড় মঞ্চের নায়ক স্টোকস এর আগে ২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের মঞ্চেও ইংলিশদের জিতিয়েছিলেন ব্যাট হাতে। সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একাই বুক চিতিয়ে লড়াই করে ৮৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে টিকিয়ে রাখেন। পরে সুপার ওভারে এসে দলকে জেতান এই ব্যাটসম্যান।