বিনোদন

সৃজিত কৌশিকদার কাছে কাজ চেয়েও পাইনি তাই আমার রাস্তা আমাকেই দেখতে হল

প্রশ্ন: ‘কাছের মানুষ’-এর জন্য তা হলে ‘এশিয়া কাপ’ মিস?

দেব: (একটু হেসে) কাজ কাজের জায়গায়। এর মধ্যেও পরিকল্পনা করছি যদি ফাইনাল দেখতে যাওয়া যায়। আসলে ম্যাচ এ রকম প্রচুর আসবে কিন্তু সিনেমাকে তো থাকতে হবে। পুজোয় মানুষ সিনেমা দেখতে পছন্দ করে। আর এই সময়ে দাঁড়িয়ে এই ছবিটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছবির প্রচার-ঝলক অনেকেরই ভাল লেগেছে।

প্রশ্ন: অফিসের ভোল তো পুরো বদলে ফেলেছেন। দেওয়াল জুড়ে ইতিমধ্যেই প্রযোজক দেবের ১২টা ছবি!

দেব: হ্যাঁ, সত্যিই পাঁচ বছরে ১২টা ছবি তৈরি করে ফেললাম ভাবতেই অবাক লাগছে। প্রত্যেকটা কিন্তু আলাদা আলাদা স্বাদের ছবি। আমার এখন মনে

হয় ‘ককপিট’ আজ মুক্তি পেলে আরও বেশি ব্যবসা করত। যাঁরা আমাকে ‘দেব’ তৈরি করেছেন তাঁদের মনে এখন প্রযোজক হিসাবে কিছুটা জায়গা করতে পেরেছি মনে হচ্ছে।

প্রশ্ন: নতুন প্রজন্মে দ্বিতীয় কোনও ‘দেব’ তৈরি হচ্ছে না?

দেব: সেটা বলা খুব মুশকিল। মুম্বইতেও কি তৈরি হচ্ছে?

প্রশ্ন: কিন্তু, প্রভাস, অল্লু অর্জুন, বিজয় দেবেরাকোন্ডাদের নিয়ে তো সর্ব

 সর্বত্র উন্মাদনা, সেটা কী করে?

দেব: দক্ষিণে এখনও সেই পাগলামি রয়ে গিয়েছে। তার বাইরে কিন্তু নেই। হিন্দি ছবিতে শেষ হৃতিক রোশনকে নিয়ে এই পাগলামিটা হত। এখন কি তেমন হয় টাইগার শ্রফ বা তাঁর সমসাময়িক হিরোদের নিয়ে? তাঁরা কিন্তু ভাল অভিনেতা। এটার মূল কারণ হল সিঙ্গল স্ক্রিন। সুপারস্টার তৈরি হয় সিঙ্গল স্ক্রিনে। এখন যা ভেঙে ফেলা হচ্ছে। ফলে দিনে দিনে সুপারস্টার শব্দটাই বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: টলিউডের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী তো পাড়ি দিচ্ছেন মুম্বইয়ে। আপনি মুম্বইয়ে কাজ করার কথা ভাবছেন না?

দেব: সবাই যদি বলিউডে চলে যায় তা হলে কলকাতার কী হবে? আমি যা রোজগার করি তাতে আমার সংসার ভাল মতো চলে যায়। আর আমি একটা কথা বিশ্বাস করি, বড় রাজ্যে প্রজা হওয়ার চেয়ে ছোট রাজ্যে রাজা হয়ে বেঁচে থাকা অনেক ভাল। আমি এখন এত গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছি, যা আমি আগে কখনও পাইনি। আমি যখন কমার্সিয়াল হিরো ছিলাম তখন পেয়েছি হয়তো, কিন্তু আমি জানতাম রিমেক ছবিতে অভিনয় করছি। এই নিজের গল্প বলার আনন্দটাই আলাদা। তা বলে মুম্বইয়ে কাজ করবই না সেটা বলছি না।

প্রশ্ন: আপনার কাছে কি অফার আছে এই মুহূর্তে?

দেব: ছিল। কিন্তু পছন্দ হয়নি বলে না করে দিয়েছি। আমি যদি ভাল চরিত্র না পাই তা হলে অনেক কিছু হারানোর আছে। মুম্বইয়ে গিয়ে যদি কলকাতা হারিয়ে যায় সেই ভয়টা আমার কাজ করে। অনেকে হয়তো এই ভয় পান না। কলকাতায় আমি প্রচুর ভালবাসা পেয়েছি। রাজনীতিতে থাকার পর, সিবিআইয়ের নোটিসের পরও আমায় নিয়ে কেউ কটূ কথা বলে না। এটাই তো আমার প্রাপ্তি।

প্রশ্ন: প্রায় আড়াই বছর পর আপনার ব্যানারে পথিকৃৎ ছবি তৈরি করছেন। হঠাৎ কেন পথিকৃতের উপর ভরসা করলেন?

দেব: ইন্ডাস্ট্রিতে যে বড় বড় পরিচালকরা আছেন, তাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করছিলেন না। যেমন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। আমি বলেছিলাম ‘উমা’ আমি করতে চাই। কৌশিকদাকেও বলেছিলাম আমি কাজ করতে চাই। যে সব পরিচালকদের নামে টিকিট বিক্রি হয় তাঁরা আমায় সিরিয়াসলি নিচ্ছিল না। তখন সিদ্ধান্ত নিই, তা হলে আমি নতুনদের নিয়ে কাজ করি যাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক। তাঁদের মনে হয় দেবের সঙ্গে কাজ করলে তাঁদের কিছুটা উন্নতি হবে। তাই শেষ কয়েক বছরে আমি নতুন পরিচালকদের নিয়ে কাজ করছি। এদের মধ্যে একটা খিদে আছে। আর পথিকৃৎ সত্যিই নতুন ভাবে গল্প বলতে চায়। ও এই চিত্রনাট্য অনেকের কাছে নিয়ে গিয়েছিল। তাঁরা করেননি।

প্রশ্ন: আপনি কেন ‘হ্যাঁ’ বললেন?

দেব: পথিকৃতের ভাবনাটাই দারুণ লেগেছিল। যদিও এক বছর ধরে চিত্রনাট্যকে আরও ঘষা-মাজা করা হয়েছে। আর তা ছাড়া আমি জানি সিনিয়র যাঁরা আছেন তাঁরা হয় তো আমার সঙ্গে কাজ করবেন না। তাঁরা নিজেদের পছন্দের লোককে নিয়ে ছবি তৈরি করবেন। আমি আমার নতুন টিম নিয়ে খুব খুশি। তা সে ‘কিশমিশ’-এর পরিচালক রাহুল মুখোপাধ্যায় হোক বা আরও অন্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *