প্রচ্ছদ

সুইজারল্যান্ডে রোবট মৌমাছির মাধ্যমে শিশুদের প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: সুইজারল্যান্ডে এক মৌমাছি রোবটকে কিন্ডারগার্টেনের শিশুদের মধ্যে খেলাচ্ছলে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত জ্ঞানের ভিত্তি সৃষ্টির কাজে লাগানো হচ্ছে। কিন্ডারগার্টেনে মৌমাছির মতো দেখতে রোবট আনা হয়েছে। শিশুদের তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান দেওয়াই সেটির কাজ। মানুয়েলা বোডমার এই ডিজিটাল টুল ব্যবহার করে শিশুদের ডিজিটাল যুগের জন্য প্রস্তুত করছেন।

শিক্ষিকা হিসেবে মানুয়েলা বলেন, ‘‘আমি এই রোবট কাজে লাগাতে ভালোবাসি। সেটি শিশুদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে এবং তাদের যুক্তিযুক্ত চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে। তাদের অনেক ভাবনাচিন্তা করতে হয়, মৌমাছি রোবটে ভরার জন্য পদক্ষেপগুলির পরিকল্পনা করতে হয়। এমন প্রোগ্রামিং করতে তাদের বেশ মাথা ঘামাতে হয়। দারুণ অভিজ্ঞতা!’’

সুইজারল্যান্ডের জুরিখ জেলায় গবেষণার ফল হিসেবে বিশেষ এই খেলার রোবট তৈরি করা হয়েছে। ‘বি-বট’ নামে এই রোবটের এক চারণক্ষেত্রে ফুল, মধু ও নানা বাধা-বিপত্তি রয়েছে। শিশুদের বি-বটের গতিবিধি প্রোগ্রাম করতে হয়। ডান দিক ঘোরা, সামনে তাকানো এবং সোজা চলার নির্দেশ দিতে হয় পরিকল্পনা সফল হলে সেটি তার গন্তব্যে পৌঁছতে পারে।

এই কিন্ডারগার্টেনে বি-বট নিয়ে খেলা হয়। কিন্ডারগার্টেনে থাকতেই শিশুদের পক্ষে প্রোগ্রামিং শেখা সম্ভব কিনা এবং এমন ডিজিটাল টুল কতটা সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে, প্রোফেসর এল্সবেট স্ট্যার্ন ও অন্যান্যরা সেই গবেষণা করছেন।

পেট্রা আডামাৎসেক ‘চাইল্ড ল্যাব’ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠাতা। সেখান থেকেই বি-বট এসেছে। তিনি মনে করেন, ‘‘সমান অধিকারের সুযোগই আমাদের কাজের প্রধান কারণ৷ স্কুলে কম বয়সেই যখন তথ্যপ্রযুক্তি শেখানো হয়, তখন সব শিশু এই প্রযুক্তির সংস্পর্শে আসে এবং সড়গড় হয়ে ওঠে৷ সেই দায়িত্ব বাবা-মার উপর দিলে সাধারণত ছেলেদের কোনো কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি করে দেওয়া হয়৷ ছেলেরাই প্রথম কম্পিউটার হাতে পায়। সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিশুদের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটে।’

সহজ টুলের সাহায্যে একেবারে শিশু বয়স থেকে প্রোগ্রামিং শিখলে এবং সেটা করতে গিয়ে মজা পেলে মন্দ কী! মৌমাছি রোবট, গেমিং ফিল্ড এবং বাক্সের মধ্যে খেলার কার্ড এরই মধ্যে প্রায় ৮,০০০ শিশুর নাগালে এসে গেছে। এই গবেষণার ফল কী বলে? ডিজিটাল মৌমাছির মাধ্যমে শিক্ষা এবং তথ্য-প্রযুক্তির ভিত্তি আসলে কী?

গবেষক হিসেবে প্রো. এল্সবেট স্ট্যার্ন বলেন. ‘‘বস্তুগুলি নির্দিষ্ট বিন্যাস অনুযায়ী সাজানো এর মধ্যে পড়ে। অপ্টিমাইজেশন স্ট্র্যাটিজি এবং লক্ষ্য অনুযায়ী ভাবনাচিন্তা করাও জরুরি। কখনো আবার পরিবেশের বাকি বিষয়গুলিও বিবেচনা করতে হয়।আমরা সে সব পরীক্ষা করেছি।’’

তার গবেষণার ফল অনুযায়ী তথ্য-প্রযুক্তির ভিত্তি অবশ্যই কিন্ডারগার্টেনে শেখা সম্ভব। তবে আরও কিছু বিষয় ভুললে চলবে না।

প্রো. স্ট্যার্ন বলেন, ‘‘আমাদের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অনুমান ছিল। প্রথমত, শিশুরা কি একা খেলার সময় ততটাই শিখতে পারে, যতটা তারা নির্দেশ অনুযায়ী কাজের সময়ে শেখে? এমন অনুমান সত্য প্রমাণিত হয়নি। শিশুদের নির্দেশের প্রয়োজন হয়৷ দ্বিতীয়ত ইলেকট্রনিক খেলনা হিসেবে বি-বট সব সময়ে আরও ভালো ফল দেখায় না। বরং অনেক কিছু বোর্ড গেমের মাধ্যমে আরও ভালোভাবে শেখানো সম্ভব। বাস্তবেও এমনটাই দেখা গেছে।’’

ডিজিটাল চিন্তাধারা শেখার জন্য সব সময়ে যে ডিজিটাল টুলের প্রয়োজন, সেটা ঠিক নয়। তবে বি-বটের কিছু সুবিধা রয়েছে। সেটি খেলাচ্ছলে ফিডব্যাক দেয়। সুইজারল্যান্ডের স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনগুলি বিনামূল্যে এই টুল ধার করতে পারে। এই কিন্ডারগার্টেনেও সম্ভবত আবার বি-বট কাজে লাগানো হবে।

আরো পড়ুন:

এবার পণ্য নিয়ে আসবে রোবট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *