প্রচ্ছদ

সীমান্ত বিরোধ নিরসনে চীন-ভুটান চুক্তি, সতর্ক ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: অমীমাংসিত সীমান্ত বিরোধ নিরসনে ‘তিন দফা রোডম্যাপ’ নিয়ে চুক্তি করেছে চীন ও ভুটান। গত বৃহস্পতিবার করা ওই চুক্তির আওতায় রয়েছে ডোকলাম সীমান্ত। তিন দেশের সীমান্তে থাকা ওই অঞ্চলে চার বছর আগে ভুটানের দাবি করা অংশে সড়ক সম্প্রসারণের চেষ্টা চালায় চীন। ওই সময়ে ৭৩ দিন ধরে মুখোমুখি অবস্থান নেয় চীন ও ভারতের সেনাবাহিনী। এবার ওই বিরোধ নিরসনে চুক্তি করেছে বেইজিং-থিম্পু। তবে এতে ভারতকে রাখা হয়নি। এরপরই সতর্ক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে দিল্লি।

ভুটানের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিয়োনপো টান্ডি দর্জি এবং চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ জিয়ানঘাও তিন দফা রোডম্যাপের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই চুক্তি সীমান্ত আলোচনায় নতুন গতি জোগাবে। ভুটান বলছে, পরস্পরের মঙ্গল কামনা, বোঝাপড়া ও মানিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এ রোডম্যাপের বাস্তবায়ন সীমান্ত আলোচনার সফল পরিসমাপ্তি ঘটাবে, যা উভয়পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

এরপরই এক বিবৃতিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ভুটান ও চীনের মধ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার বিষয়টি আমরা আমলে নিয়েছি। সবাই জানেন ১৯৮৪ সাল থেকে চীন ও ভুটান সীমান্ত নিয়ে দরকষাকষি করছে। ভারতও একইভাবে দরকষাকষি করছে। খবর এনডিটিভির।

২০১৭ সালে ডোকলাম সীমান্তে ভারত ও চীনের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে দুই পারমাণবিক ক্ষমতাধর প্রতিবেশী দেশের মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ার উপক্রম হয়। ওই এলাকাটি নিজেদের বলে বরাবরই দাবি করে আসছে ভুটান। ভারতও ওই দাবিকে সমর্থন করে। তবে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই ওই এলাকায় চীনের সড়ক সম্প্রসারণের বিরোধিতা করে ভারত। ওই ঘটনায় কয়েক দফা আলোচনার পর ৭৩ দিনের মুখোমুখি অবস্থানের অবসান ঘটে।

অরুণাচল নিয়ে বাগ্যুদ্ধে বেইজিংদিল্লি: ভারতের অরুণাচল প্রদেশ নিয়েও চীনের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। এ দুই দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে মতপার্থক্য দীর্ঘ দিনের। এবার ভারতের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডুর অরুণাচল সফর ঘিরে নতুন করে বাগ্‌যুদ্ধে জড়িয়েছে দেশ দুটি। ৯ অক্টোবর ওই রাজ্যের বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে বক্তব্য দেন নাইডু। এরপরেই চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বিবৃতি দিয়ে বলেন, সীমান্ত সম্পর্কে চীনের অবস্থান খুব স্পষ্ট। চীন সরকার কখনও তথাকথিত অরুণাচল প্রদেশে ভারতের বেআইনি দখলদারিকে স্বীকৃতি দেয়নি। তাই ভারতীয় নেতার সেখানে যাওয়ার বিষয়টি দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করা হচ্ছে।

ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, চীনের এই মন্তব্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সম্প্রতি তাওয়াং এলাকায় ভারত এবং চীনের সেনাদের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়া। তখন ওই বিষয়টির সমাধান হতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। এরপরেই প্রায় ১০০ জন চীনা সেনা অরুণাচল সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করা হয়।

চীনের অরুণাচল নিয়ে করা মন্তব্যের বিরোধিতা করে ভারতীয় কর্মকর্তা অরিন্দম বাগচী বলেন, চীনের সরকারি মুখপাত্রের মন্তব্য আমরা লক্ষ্য করেছি। এই ধরনের মন্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

সম্প্রতি দুই দেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। তবে এতে ভারতের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। এর আগে গত মাসে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হয়। এতে দ্রুত সীমান্ত সংকট সমাধানে সম্মত হন তারা। এরপরও এই সংকটের সুরাহা হয়নি। বরং অরুণাচল নিয়ে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ছে।

আরো পড়ুন:

শর্ত সাপেক্ষে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *