ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: রেলস্টেশনে বসে পড়াশোনা করছেন অনেকেই। প্লাটফর্মে প্রবেশের জন্য তাদের রয়েছে আলাদা পরিচয়পত্র।
দূর থেকে এসে সেখানে কয়েক দিন অবস্থানও করছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের বিহারের সাসারাম রেলস্টেশন এভাবেই পড়াশোনা করছেন অনেক চাকরিপ্রার্থী। সরকারি চাকরি পেতে তারা ১৯ কিলোমিটার দূরের রোহতাস গ্রাম থেকে সেখানে এসে পড়াশোনা করেন।
দূর থেকে রেলস্টেশনে এসে পড়াশোনা করার একাধিক কারণ রয়েছে। রোহতাস গ্রামে দিন-রাতের প্রায় কোনো সময়েই তেমন আলো থাকে না। মাওবাদী সন্ত্রাসীদের হামলার আতঙ্কে থাকেন বাসিন্দারা।
সাসারাম রেলস্টেশনে ভোরের আলো বের হওয়া পর্যন্ত বৈদ্যুতিক বাতি চালু থাকে। সেখানে একে অন্যের সঙ্গে আলোচনা করে পড়াশোনা করার সুযোগ পান। আছেন এক ঝাঁক দক্ষ শিক্ষক, যারা নিয়মিত এসে এই শিক্ষার্থীদের পড়ান।
লক্ষ্য সরকারি চাকরি
দূরের গ্রাম থেকে মাইলের পর মাইল হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে সেই স্টেশনে এসে পড়াশোনা করেন তারা। তাদের একমাত্র লক্ষ্য সরকারি চাকরি। তাই সর্বভারতীয় স্তরের আইএএস, আইপিএস, আইএফএস এবং রাজ্যস্তরের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন। এছাড়া প্রস্তুতি নেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (আইআইটি) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (আইআইএম)-এর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য।
শুধু চাকরির লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নয়, ভাইভার প্রশিক্ষণও নেন তারা। সেখানে পড়াশোনা করে অনেকে এরই মধ্যে বিভিন্ন সরকারি চাকরি পেয়েছেন। প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় ২ ঘণ্টা করে চলে সেই কোচিং ক্লাস। সাসারাম রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মেই পড়ানো হয় ইংরেজি, হিন্দিসহ বিভিন্ন ভাষা, গণিত, কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স ও রিজনিং।
৫০০ জনের পরিচয়পত্র
সাসারাম রেলস্টেশনে বসে পড়াশোনা করার সুযোগ করে দিতে ৫০০ শিক্ষার্থীর জন্য আলাদা পরিচয়পত্র দিয়েছেন স্টেশন কর্তৃপক্ষ। স্টেশনে ঢুকতে বা বের হতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়।
তাই অনেক শিক্ষার্থী রাতের কোচিং ক্লাসের পর আর মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়িতে ফিরে যান না। স্টেশনেই থেকে যান তিন-চার দিন বা দুই-এক সপ্তাহ।
রোহতাসের মতো আরও অনেক গ্রাম আছে ভারতে, যেখানে সারা দিন আলো থাকে না বললেই চলে। এমন এলাকা আছে পশ্চিমবঙ্গেও। সেই সব জায়গায় রয়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নানা সমস্যা।
আরো পড়ুন: