ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: “জীবনের প্রথম চাকরির বেতন ছিল খুবই সামান্য। হাতে কিছুই থাকতো না মাস শেষে। নানা চড়াইউতরাই পার করে যখন ভালো একটি চাকরিতে যোগ দিয়েছেন, তখন সন্তানের মা হয়েছেন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছেন। তবে থেমে থাকেননি। নিজের ব্যবসা দাঁড় করিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন অন্য নারীদের।”

বলা হচ্ছে ‘লিনাস থাউজেন্ড থিংস’ এর স্বত্বাধিকারী শাহরুখ লিনা ওয়াফির কথা। তিনি জানালেন, “পড়াশোনা শেষ করে ৬,৫০০ টাকার একটি চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন। বাসাবোর বাসা থেকে বনানী ১১ নম্বরের সেই অফিসে যাতায়াত করতে বেতনের সিংহভাগ খরচ হয়ে যেত। মাস শেষে হাতে থাকতো মাত্র ৩০০-৩৫০ টাকা। সেটা দিয়ে নিজের শখ পূরণ করতেও কষ্ট হতো।”

কিছুদিন চাকরি করার পর বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে এমবিএতে ভর্তি হন তিনি। প্রথম চাকরির সাড়ে পাঁচ মাস পর চাকরি হয় ওয়ারিদ টেলিকমে। এরপর সেই চাকরি ছেড়ে

যোগ দেন ইউসিবি ব্যাংকে। ২০১৪ সালে বিয়ে হয় লিনার। এক বছর পরেই সন্তানের মা হন। সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষ হওয়ার পর এক মাস অফিস করে চাকরিটা ছেড়ে দেন। এরপর পুরোপুরি মা এবং গৃহিণী বনে যান। লীনার বন্ধুরা ততদিনে চাকরিতে ভালো অবস্থান গড়ে নিয়েছেন। লিনার আফসোস হয়, হতাশায় ভুগতে থাকেন। পাশে দাঁড়ান স্বামী। পোশাকের ব্যবসা শুরু করার জন্য টাকা দেন লীনাকে। এর আগে অফলাইনে পোশাকের ব্যবসা করার অভিজ্ঞতাকে অনলাইনে কাজে লাগান লিনা। ধানমন্ডির অর্চাড পয়েন্টে দোকান নিয়ে পার্টনারশিপে ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসা কিছুটা জমে ওঠার পর দোকান নেন পুলিশ প্লাজায়।

পুলিশ প্লাজার ১৪৩ স্কয়ার ফিটের ছোট দোকানটি নেয়ার সময় অনেকেই লিনাকে বলেছিলেন, ‘ব্যবসা চলবে না’। কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণ করে প্রথম মাসেই তিন জন কর্মচারীর খরচ, দোকান ভাড়া তুলে ফেলেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়াতে থাকেন। আরেকটি দোকান নেন পিঙ্ক সিটিতে। তারপর অর্চাড পয়েন্টে পার্টনারশিপে নেয়া দোকানটি ছেড়ে দেন।

লীনার এই যাত্রায় উৎসাহী হয়েছেন অনেক তারকা। সংগীত তারকা কনা, চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা, অভিনেত্রী দিলারা জামানকে পাশে পেয়েছেন লীনা। দিলারা জামান লিনাকে সবসময় বলতেন, ‘আমি চাই মেয়েরা এগিয়ে যাক’।

লিনার মতে, “একজন নারীকে সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পাশাপাশি একজন সফল মা, স্ত্রী, গৃহিণীও হতে হয়। এগিয়ে যাওয়ার পথে অনেক নেতিবাচক কথা শুনতে হয় মেয়েদের।তবে

সেসব শুনে থেমে থাকলে চলবে না। লেগে থাকতে হবে।কর্মীদের সাথে বন্ধুসুলভ আচরণ করতে হবে। সততা বজায় রাখতে হবে। তাহলেই উপরে ওঠা সম্ভব।”
সূত্র: চ্যানেল আই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *