বিনোদন

সত্যি সত্যি কবি হওয়ার চেষ্টা করছি

সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমেছে। আশপাশে সুনসান নীরবতা। মাঝেমধ্যে টুংটাং করে রিকশার যাওয়া-আসার শব্দ। হাতিরঝিল লেকের পাশেই প্রিয়াঙ্কা শুটিং হাউস। বাড়ির ভেতরে ঢুকে দেখা গেল সরগরম অবস্থা। চলছে চাদর ছবির শুটিং। মূল ফটকের পকেট গেট ঠেলে বাড়ির আঙিনায় ঢুকতেই শুটিংয়ের সরঞ্জাম চোখে পড়ে। তিনতলা বাড়ির নিচতলার একটি রুমে বড় জটলা। সেখানেই ছবির পরিচালক জাকির হোসেনকে পাওয়া গেল। ঘরের এক পাশে ক্যামেরা বসিয়ে দৃশ্য ধারণের জন্য সেট সাজাচ্ছেন কর্মীরা।
জরি নামের এক অসহায় মেয়েকে নিয়ে ছবির গল্প। ছোটবেলা থেকেই তার সংগ্রামী জীবন। ঢাকায় দূরসম্পর্কের এক খালার বাসায় থাকে। কবিদের এক সংগঠন জরির সন্ধান পেয়েছে। তার জীবনসংগ্রামের গল্প শোনার জন্য মান্দাসসহ কয়েকজন কবি হাজির হয় জরির খালার বাসায়। ক্যামেরায় এমন একটি দৃশ্য ধারণ করতে বেশ কয়েকবার টেক নিতে হলো।

পরের দৃশ্যের শুটিং হবে দোতলায়। প্রস্তুতি নিতে ওপরে চলে গেলেন সেটের কর্মীরা। এই ফাঁকে নিচতলায় জরিকে পাওয়া গেল। জরি চরিত্রে অভিনয় করছেন বুবলী। তিনি বলেন, ‘ছবিটি এফডিসির প্রযোজনায় তৈরি হচ্ছে। আমরা যারা সিনেমায় অভিনয় করি, তাদের কাছে এফডিসি একটি পরিবার, আপন ঘর। বহু বছর পর সিনেমায় টাকা বিনিয়োগ করেছে সেই এফডিসি। সেই সিনেমায় সুযোগ পেয়েছি।’

জাকির হোসেনের সঙ্গে আগেও কাজ করেছেন বুবলী। পরিচালকের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বলেন, ছবিটি তিনি যেভাবে উপস্থাপন করছেন, সেটা অসাধারণ।
দোতলায় গিয়ে সাইমনকেও পাওয়া গেল। কবি মান্দাস চরিত্রটি করছেন তিনি। মুখভর্তি বড় দাড়ি। দাড়িতে হাত বোলাতে বোলাতে বলছিলেন, ‘এই প্রথম কবির চরিত্র করছি। দেখেন না, কত বড় দাড়ি রাখতে হয়েছে। কয়েক দিন ধরে কাজ করছি। নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে।’ চরিত্রের প্রস্তুতি সম্পর্কে হাসতে হাসতে বলেন, ‘সত্যি সত্যি কবি হওয়ার চেষ্টা করছি। কবিতার বই কিনেছি অনেকগুলো।’

শুটিং লোকেশনেই এফডিসির ফ্লোর অ্যান্ড সেট ইনচার্জ হিমাদ্রি বড়ুয়ার সঙ্গে দেখা। এফডিসির পক্ষ থেকে শুটিং সমন্বয় করছেন তিনি। হিমাদ্রি বলেন, ‘যে কয়েক দিন কাজ হয়েছে, খুব ভালো হচ্ছে। টানা শুটিং করে ছবি শেষ করব। এর আগে অনুদান পাওয়া অনেক ছবির শুটিংই শুরু হয়নি, অথচ আমরা চলতি বছর অনুদান পেয়েই কাজ শুরু করে দিয়েছি। অনুদানের ছবির ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করতে চাই।’

রাত বাড়ে। ততক্ষণে সাইমন ও বুবলীর কাজ সেদিনের মতো প্যাকআপ হয়ে গেছে। অন্য শিল্পীদের দৃশ্য ধারণের আয়োজন চলছে। এর ফাঁকে পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘বহু বছর পর এফডিসি সিনেমা প্রযোজনা করছে। নিঃসন্দেহে এটি সিনেমার জন্য আশীর্বাদ। আমি সুযোগ পেয়েছি, এটি আমার জন্য সম্মানের।’

ছবির সব কাজই সঠিক পরিকল্পনার মধ্যে হচ্ছে জানিয়ে পরিচালক বলেন, ‘এফডিসির সঙ্গে চুক্তি থেকে শুরু করে আজকের শুটিং পর্যন্ত একেবারে পরিছন্নভাবেই কাজটি হচ্ছে। শুটিংয়ের আগে আমরা বেশ কয়েক দিন এফডিসির তত্ত্বাবধানে রিহার্সাল করেছি। এতে সুন্দর করে কাজটি করতে পারছি।’ তিনি জানালেন, আগামী মাসের মাঝামাঝি শুটিং শেষ হবে।
চাদর ছবির জন্য এফডিসিকে ৭০ লাখ টাকা অনুদান দেয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। তবে এই ছবির বাজেট প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা। বাকি টাকা বিভিন্ন স্পনসরের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে এফডিসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *