প্রচ্ছদ

সড়ক মেরামত ও ড্রেন পরিষ্কারে ১০ লাখ করে টাকা পাচ্ছেন উত্তরের কাউন্সিলররা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: জলাবদ্ধতা নিরসনে উত্তরের প্রত্যেক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের জন্য ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এতে সাময়িকভাবে মানুষের ভোগান্তি কমবে বলে দাবি সিটি করপোরেশনের। সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, করপোরেশনের সর্বোচ্চ ফোরাম বোর্ড সভায় জলাবদ্ধতার বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হয়। পরে সভায় ১০ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি ঘোষণা দেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এ অর্থ বরাদ্দের বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা বলেন, টাকা কীভাবে ব্যয় হবে এর জন্য অঞ্চলভিত্তিক কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে তারা সাময়িকভাবে রাস্তাঘাট মেরামত, জলাবদ্ধতা নিরসন, ড্রেন পরিষ্কারের জন্য এ টাকা খরচ করতে পারবেন। তবে প্রথমেই ৩ লাখ টাকা করে পাবেন। এ টাকা শেষ হলে পরের কিস্তিতে আরও ৩ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এক জন কাউন্সিলর জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। তাদের কাছে আলাদা ফান্ড না থাকায় আমরা এ ব্যবস্থা করেছি। যেন এক জন কাউন্সিলর ওয়ার্ডের সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারেন।

তবে কাউন্সিলররা বলছেন, ওয়ার্ডের সমস্যা অনুযায়ী এই বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। বিশেষ করে সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত নতুন ওয়ার্ডের জন্য আলাদা করে বেশি টাকা বরাদ্দ দেওয়ার দরকার ছিল।

নতুন ওয়ার্ডগুলোতে রাস্তায় পানি জমে এতো বাজে অবস্থা তৈরি হয় যে চলাচলের পরিবেশ নেই। মানুষ আমাদের বলে, আপনি কীসের কাউন্সিলর? মানুষের বকা শুনতে হয়। ফেসবুকে লেখালেখি সহ্য করতে হয়। অন্য কাউন্সিলররা বলছেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে একেকটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে কয়েক কোটি টাকা প্রয়োজন। এখানে ১০ লাখ টাকা দিয়ে কী হবে? নালা পরিষ্কার করতেও এ টাকা পর্যাপ্ত না। তাই এই টাকায় ফলপ্রসূ কোনো সমাধান দেখি না।

উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডি এম শামীম বলেন, বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এটি একটি ভালো উদ্যোগ। তবে যে টাকা দেওয়া হয়েছে সেটি একেবারেই নগণ্য। বিশেষ করে নতুন ওয়ার্ডগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা নিজেদের ফান্ড থেকে টাকা দিয়ে আর কত সড়ক ঠিক করব। নতুন ওয়ার্ডগুলোর জন্য আরও বেশি বরাদ্দ দরকার ছিল।

ডিএনসিসির নতুন ওয়ার্ড ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আনিসুর রহমান নাঈম বলেন, করপোরেশনের অনেক ফান্ড আছে কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে আমাদের নতুন ওয়ার্ডগুলো সুবিধার বাইরে রয়ে যাচ্ছে। নদীর সঙ্গে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে ড্রেনেজ সিস্টেম কার্যকর করার জন্য মাস্টার প্ল্যান করতে হবে। আমাদের মেয়র মহোদয়ের যথেষ্ট ইচ্ছে আছে, আশা করছি সে অনুযায়ী সামনে কাজ হবে। এই টাকা দিয়ে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দূর হবে না। এই টাকা খরচেও অনেক জটিলতা রাখা হয়েছে বলে তিনি জানান।

ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনের দায়িত্ব ঢাকা দুই সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর খাল ও বক্স কালভার্টগুলো পরিষ্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। কিন্তু এবারও রাজধানীবাসীর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলেনি। তবে কয়েকটি এলাকায় আগের চাইতে দ্রুত পানি নেমে যাচ্ছে। দুই সিটি বলছে, দীর্ঘদিনের জঞ্জাল পাঁচ মাসে সমাধান করা সম্ভব না। নগর বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, দুই সিটি করপোরেশন আন্তরিকতা নিয়ে কাজ চালিয়ে গেলে আগামী বর্ষায় এর সুফল মিলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *