লাইফস্টাইল

সংসার খরচ বাঁচাতে যে কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে

হু হু করে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। বাজারের এমন কোনো পণ্য নেই, যেটির মূল্য গত ছ’মাসের মধ্যে বাড়েনি। চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবান, ওষুধ, মসলা—সব জিনিসের দামই বাড়তি। জামাকাপড় থেকে শুরু করে তৈজসপত্র কিংবা আসবাবপত্র সবকিছুর দাম বেড়েই চলছে। থেমে নেই নির্মাণসামগ্রীও। এ অবস্থায় সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মধ্যবিত্ত, নিম্ন-মধ্যবিত্তদের। ধনীদেরও হিসেব করে চলতে হচ্ছে এই মুহূর্তে।

তাই সঞ্চয় করতে বা স্বাভাবিকভাবে সংসার চালাতে একটু কৌশলী হতে হবে। কিছুটা কৌশল অবলম্বন করলে বেঁচে যেতে পারে অযাচিত খরচ। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কী কী কৌশল বা উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।

খাত বরাদ্দ করে নিন :

মাসের শুরুতেই খরচের খাত বরাদ্দ করে নিন। অর্থাৎ কোন খাতে কত খরচ করবেন বা খরচ করার সামর্থ্য রাখেন, সেটি বিবেচনা করে নোটবুকে খাত হিসাব করে নিতে পারেন। ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ, বাড়িভাড়া, বাজারখরচ, যাতায়াত, ওষুধপথ্য, অতিথি-মেহমান ও আনুষঙ্গিক খরচের খাত আগেবাগেই হিসেব করে রাখা যেতে পারে।

খরচের বেলায় প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন :

ধরুন, কেউ তার প্রয়োজন ও সাধ্যমতো বিদেশি ব্র্যান্ডের প্রসাধনী কিনলো। সেটি হয়তো তার সামর্থ্যের ভেতরে। এখন যদি তার কেনা দেখে আপনি আপনার সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে কিনতে যান, তাহলে সেটা হবে অসুস্থ প্রতিযোগিতা; যা আপনাকে আর্থিকভাবে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেবে।

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে :

অযথা ঘরের লাইট-ফ্যান ও এসি চালু রাখবেন না। সংসার খরচ অনেকাংশেই বেড়ে যায় এসব ইলেকট্রিক যন্ত্রের বাড়তি বা অযথা ব্যবহারে। তাই যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো সরচরাচর ব্যবহার করেন না, সেগুলোর বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ রাখুন। এতে বিদ্যুতের অপচয় কমবে। যখন প্রয়োজন হবে, তখনই সংযোগ চালু করুন।

অপ্রয়োজনে খরচ করবেন না :

ধরুন, এই মুহূর্তে আপনি একটা ভালো কনফিগারেশনের দামি মোবাইল সেট কেনার কথা ভাবছেন। কিন্তু কেনার আগে আপনাকে ভাবতে হবে, আসলে সেটি আপনার এখনই কতটা প্রয়োজন। এই মুহূর্তে আপনার সামর্থ্যের ভেতরে আছে কি না।

উপলক্ষ্য বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে কিনুন :

কেনাকাটার সময় বিভিন্ন উপলক্ষ্য বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে কিনুন। এতে মূল্যছাড় পাবেন। টানাটানির সংসারে মূল্যছাড়ের সময় কেনাকাটা করলে অনেক সাশ্রয় হয়। কোনো গিফট ভাউচার পেলে সেটাও ব্যবহার করুন।

ব্যয়ের সমতা রাখুন :

যদি স্বামী-স্ত্রী দুজনেই আয় করে থাকেন, তাহলে ব্যয়ের মধ্যে সমতা রেখে চলুন। সংসারের খরচ ভাগ করে নিন। একজনের ওপর সব চাপিয়ে দেবেন না। কেউ সংসারে খরচ করলে অন্যজন ঋণ মেটান। প্রয়োজনে আলাদা সেভিংস অ্যাকাউন্ট করে রাখুন। এতে দুজনের সমঝোতায় বাড়তি খরচ অনেকটাই কমাতে পারবেন।

হুটহাট ঋণ করার মানসিকতা দূর করতে হবে :

অনেকেই আছেন, যারা সামান্য প্রয়োজনেই ধারদেনা করতে অভ্যস্ত। এই ধারদেনা করার অভ্যাস বা অভ্যস্ততা আপনাতে আর্থিকভাবে অনেকটাই নাজুক করে দেবে।

মাসিক বাজার একসঙ্গে কিনুন :

কাঁচা বাজার ছাড়া চাল, ডাল, তেল, লবনসহ বাকি সব কিছু এক মাসের জন্য একবারে কিনে রাখুন। এতে আপনার বারবার বাজারে যাওয়ার জন্য খরচ আর সময় দুটোই বাঁচবে।

নিজের কাজ নিজে করতে চেষ্টা করুন :

সামান্য চেষ্টা বা শ্রম দিলেই যে কাজটি আপনার নিজের পক্ষে করা সম্ভব, সেটি নিজেই করে ফেলুন। বাইরের লোক দিয়ে করিয়ে অযথা পয়সা নষ্ট না করলেই মাস শেষে বেঁচে যেতে পারে কিছু অর্থ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *