সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি, ধূমকেতু ডটকম: সিরাজগঞ্জের চলনবিল অঞ্চলের সম্ভাবনাময় খাত শুটকি মাছের চাতালগুলোতে শ্রমিকদের কর্ম-ব্যস্ততার শেষ নেই। গড়ে উঠেছে অন্তত ৪শ’ শুটকি চাতাল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ৭শ’ থেকে ৮শ’ কোটি টাকার শুটকি রপ্তানির আশা সংশ্লিষ্টদের। তবে মোকামে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।
চলনবিল হতে বন্যার পানি নামছে। জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে মাছ। টেংড়া, খলসে, পুটি, চাঁন্দা, বাইম, শৈল, টাকি, চিংড়িতে লবণ মেখে রোদে শুকিয়ে করা হচ্ছে শুটকি। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, পাবনা, নাটোর, বগুড়া ও নওগাঁসহ মোট ৯ উপজেলায় চলে শুটকি প্রক্রিয়াকরণ।
আশপাশের হাটবাজার থেকে পুটি, খলসে, চাঁন্দা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে কিনে শুকানো হচ্ছে চাতালে। শুটকি বিক্রি হচ্ছে আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ টাকা কেজি দরে।
জেলেরা জানান, এই সময় পুঁটি মাছটা বেশি হয়। তাই চাতালে এসে বিক্রি করে থাকি।
চাতাল মালিকরা জানান, সুজানগরের ওরা এসে আমাদের এলাকা থেকে মাছ নিয়ে শুটকি করতো, ওইগুলো দেখার পর আমরা স্থানীয়ভাবে শুরু করেছি। অন্য আরেকজন জানান, চলনবিলে শুটকি এখন বাংলাদেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন ভারত ও দেশের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে।
আগে যেখানে বর্ষা মৌসুমে কাজ থাকতো না কৃষি শ্রমিকদের। এখন শুটকির চাতালে কাজ করছেন সহস্রাধিক শ্রমিক। তবে নারী ও শিশু শ্রমিকরা হচ্ছে মজুরী বৈষম্যের শিকার।
নারী শ্রমিকরা জানান, পুরুষ শ্রমিকরা ৩০০ টাকা পাচ্ছে কিন্তু আমাদেরকে ১২০ দিচ্ছে।
এখানে উৎপাদিত শুটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে। তবে রপ্তানিকারকদের সিন্ডিকেটের কারণে তেমন একটা লাভের মুখ দেখছেনা শুটকি ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা জানান, সিন্ডিকেট করে মাছ নিয়ে যাচ্ছে সৈয়দপুর। আমরা বিক্রি করার জন্য অন্য কোথাও জায়গা পাচ্ছি না। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে যদি ওই রকম একটি বড় আড়ৎ থাকতো তাহলে আমরা ভাল দাম পেতাম।
তবে ব্যবসায়ীদের দাবি বাস্তবায়নের ইঙ্গিত দিয়েছেন জেলা মৎস্য বিভাগ।
সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাহেদ আলী বলেন, প্রস্তাব পাঠিয়েছি, ডিটিপি পাঠানো হয়েছে মৎস্য অধিদপ্তরকে। সেখানে শুটকির বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাতে শুটকি চাষীরা প্রণোদনা পায়, কারিগরি সহায়তা পায় এবং বিপণনের জন্য যাতে একটা ব্যবস্থা হয়। শুটকি বাজারজাতকরণে চলনবিল অঞ্চলে মোকাম স্থাপনের দাবি সংশ্লিষ্টদের।