ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু বাংলা: শীত অনুভূত হচ্ছে। ঘুমোতে গেলে জড়াতে হচ্ছে কাঁথা, সাতসকালে ঘাসে শিশিরবিন্দু জানান দেয় শীত দ্বারপ্রান্তে।
দিনে গরম, রাতে কুয়াশার শীতল হাওয়া আর ভোররাতে ঘন কুয়াশার হাতছানিই বলে দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সকাল। ফলে লেপ-তোশক কারিগরদের ব্যস্ততা ও ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের আনাগোনাও বেড়েছে উত্তরের জনপদ নীলফামারীর সৈয়দপুরে। গ্রামের নারীরাও শীত নিবারণের জন্য কাঁথা সেলাই করে নিচ্ছেন।
বুধবার বাজারে বিভিন্ন বেডিং আর কটন শোপ দোকানগুলোতে সরেজমিন গিয়ে দেখা মিলেছে কারিগরদের লেপ তৈরির কর্মব্যস্ততা। কারিগররা কেউ তুলো ধুনছে, কেউবা ব্যস্ত লেপ-তোশক সেলাইয়ের কাজে, কেউবা লেপে হরেকরকম ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন।
এছাড়া লেপ-তোশক তৈরির ধুম লেগেছে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে, আর কর্মব্যস্ততা ও কদর বেড়েছে সৈয়দপুরের লেপ-তোশক কারিগরদের। পুরাতন লেপ মেরামতের পাশাপাশি অনেকেই আগাম শীতের প্রস্তুতি হিসাবে নতুন লেপ তৈরির জন্য দোকানে ভিড় করছেন।
লেপ তৈরি করতে আসা মুন্সিপাড়ার নাজনীন সুলতানা বলেন, কার্পাস তুলা দিয়ে একটি লেপের অর্ডার দিয়েছি। এ ছাড়া একটি পুরাতন লেপ মেরামতের জন্য এনেছি। কাপড়, তুলা, মজুরিসহ সব মিলে ১৪০০ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে লেপের মূল্য খুব একটা বেশি নয় বলে জানান তিনি।
তবে মৌসুমে লেপ-তোশক মহাজনরা খুশি হলেও খুশি নেই কারিগররা। কারণ মজুরি কম পাচ্ছেন মহাজনদের কাছ থেকে বলে দাবি তাদের।
শহরের তুলার দোকানে রেয়াজ, তানভীর, কাইয়ুমসহ আরও কয়েকজন করিগর মহাজনের দেওয়া লেপ তৈরির কাজে ব্যস্ত। তাদের মতে, একটি লেপ তৈরিতে মহাজন দেয় মাত্র ২০০ টাকা অথচ সেই লেপের ক্রেতার কাছ থেকে ইচ্ছেমতো আদায় করা হয় অর্থ।
তবে ২০০ টাকা মজুরি কম হয়েছে; তা মানতে নারাজ রাব্বি বেডিংয়ের মেরাজ, তিনি বলেন, মজুরি সহনীয় পর্যায়েই রয়েছে। তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ তৈরির খরচ। একটি ডবল লেপ বানাতে চার থেকে পাঁচ কেজি তুলা লাগে এবং খরচ পড়ে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকার মতো। সিঙ্গেল লেপে খরচ পড়ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মতো। আর লেপ বানাতে সাধারণত কার্পাস তুলা ব্যবহার করা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, চারদিকে ডিজিটালাইজের কারণে হাতে তৈরি লেপ-তোশকের কদর অনেকটা কমে গেছে। তবু শীত ঋতুতে এর কদর বেড়ে যায়; সঙ্গে বেড়ে যায় আমাদের ব্যস্ততা। শ্রমিক মজুরি, তুলার মূল্যসহ আনুষঙ্গিক কাঁচামালের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে বলে লেপ তোশকের মূল্য এ বছর তেমন বাড়বে না বলে তিনি জানান।
এদিকে শহরের শীত কেন্দ্র করে সৈয়দপুরের মার্কেটগুলোতে উঠেছে নানা ধরনের কম্বল। আকার অনুযায়ী দাম থাকলেও এ ক্ষেত্রে বড় কম্বলের দাম আড়াই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। ছোট কম্বল দেড় হাজার থেকে তিন হাজার টাকা।
এছাড়া শিশুদের জন্য কম্বলের দাম এক হাজার থেকে দুই হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে। তা ছাড়া অল্প দামের কম্বলও রয়েছে মার্কেটগুলোতে, যা তিনশ টাকা থেকে এক হাজার টাকায় পাচ্ছেন ক্রেতারা।
আরো পড়ুন: