শিক্ষা ও সাহিত্য

শতবর্ষের উৎসবে মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: অপেক্ষা পাঁচ মাস ধরে চলছে। ১ জুলাই দিনটাই কথা ছিল উৎসবে মুখরিত হওয়ার। হয়নি। করোনাভাইরাসের অতিমারি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ভালো সময়ের অপেক্ষায় চার মাস পিছিয়ে দিন ঠিক করা হয় ১ নভেম্বর। তবুও পরিস্থিতি সন্তোষজনক না হওয়ায় অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হয় আরও এক মাস। অবশেষে আজ ১ ডিসেম্বর শতবর্ষের উৎসবে মাতবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় সেজেছে নানা রঙে। ভবনে ভবনে দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা। উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলাভবন, গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা, অভ্যন্তরীণ সড়ক- কোনোখানেই কমতি নেই উৎসবের সাজের। উৎসব বললে কিছুটা কম বলা হবে। কারণ এ এক মহা উৎসব। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূরণের উৎসব। গত ১ জুলাই শতবর্ষ পূরণ হলেও করোনার কারণে এতদিন আটকে ছিল উদযাপন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এমন সময় শতবর্ষ পূরণ করছে, যখন দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। তাই উৎসবে যোগ হয়েছে বাড়তি রং। বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে আজ উৎসবের উদ্বোধন করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। রাষ্ট্রপতি ও আচার্য মোঃ আবদুল হামিদ প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করবেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন। সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

অনুষ্ঠানের শুরুতে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হবে। এরপর রাষ্ট্রপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষপূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থ ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ এবং ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ। কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও আচার্যকে বিশেষ স্যুভেনির প্রদান করবেন।

উৎসবের উদ্বোধনী দিন এবং ২, ৩, ৪ ও ১২ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে বিকেল ৪টায় আলোচনা সভা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ এবং নৃত্যকলা বিভাগের শিল্পী ও অ্যালামনাইরা সাংস্কৃৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবেন।

উদ্বোধনী দিন বিকেলে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা পর্বে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ডাকসুর সাবেক সহসভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, দি ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার অংশগ্রহণ করবেন। আলোচনা সভায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক. ড. সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় সম্মানীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন।

দ্বিতীয় দিন সাবেক উপাচার্য ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অনারারি অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক এবং বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু অংশগ্রহণ করবেন।

তৃতীয় দিনের আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার ও অনারারি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। চতুর্থ দিনের আলোচনায় সভাপতিত্ব করবেন সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শাহাদত আলী। আর ১২ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে বের হবে বিজয় শোভাযাত্রা। অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে বের হয়ে তা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হবে।

এদিন বিকেলেও আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন সাবেক প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ। এ ছাড়া ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৭টায় মহান বিজয় দিবসে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে ‘লেজার শো’র আয়োজন করা হবে।

আরো পড়ুন:

শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে খোকন কুমার রায়ের কালজয়ী গান (ভিডিও)

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *