আন্তর্জাতিক ডেস্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েও সেরে উঠেছেন ইথিওপিয়ার এক বৃদ্ধ। যার বয়স ১০০ বছরের উপরে। তিনি যেভাবে সেরে উঠেছেন তা সত্যি অবিশ্বাস্য- এমনটাই বলছেন তার চিকিৎসক।

ইথিওপিয়ার বৃদ্ধের নাম আবা তিলাহুন ওল্দেমাইকেল। পরিবার বলছে তার বয়স ১১৪। তা যদি ঠিক হয় তাহলে তিনিই এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত ব্যক্তি। কিন্তু সেটা নিশ্চিত করার মতো কোনো ‘বার্থ সার্টিফিকেট’ নেই।

মনে করা হয়, যাদের বয়স ৮০ বা তার বেশি তাদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ হলে মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তবে এই শতবর্ষী বৃদ্ধ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

ইথিওপিয়ার রাজধানী আদিস আবাবার যে মহল্লায় আবা তিলাহুন থাকেন, সেখানে করোনাভাইরাস টেস্টিং কর্মসূচি চালানোর সময় তার সংক্রমণ ধরা পড়ে। দেহে কোনো উপসর্গ দেখা দেবার আগেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর ফলে ডাক্তারদের একটি দল শুরু থেকেই এই বৃদ্ধকে নজরে রাখেন এবং চিকিৎসা দিয়ে যান।

শহরের ইয়েকা কোতেবে হাসপাতালে গুরুতর করোনাভাইরাস রোগীদের ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় আবা তিলাহুনকে। চার দিনের মধ্যেই তার শরীর ভাইরাসের দখলে চলে যায়। অবস্থা ক্রমেই খারাপের দিকে যেতে থাকে এবং এক পর্যায়ে তাকে অক্সিজেন দেয়া শুরু হয়। সব মিলিয়ে আবা তিলাহুন ১৪ দিন হাসপাতালে ছিলেন। এর মধ্যে এক সপ্তাহ ধরেই তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়।

ইয়েকা কোতেবে হাসপাতাল অবশ্য নিশ্চিত করে বলতে পারেনি যে, তাদের রোগীর বয়স আসলেই ১১৪ কিনা। কিন্তু চিকিৎসক দল বলছে তার বয়স যে ১০০-র ওপর তা নিশ্চিত। তাদের অনুমান আবা তিলাহুনের বয়স ১০৯।

তরুণ বয়সে আবা তিলাহুন দক্ষিণ সুদান থেকে আদ্দিস আবাবায় আসেন। দেশটির উত্তাল অবস্থার মধ্যে তার তরুণ জীবন কেটেছে। তিনি ১৯৩৫ থেকে ১৯৪১ সালের মধ্যে ইতালির দখলদারিত্ব প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি ১৯৭৪ সালে দেখেছেন সম্রাট হাইলা সেলাসির উৎখাত, ১৯৯১ সালে মার্কসবাদী ডার্গ প্রশাসনের পতন এবং এখন মহামারী কোভিড-১৯র প্রত্যক্ষদর্শী।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ইথিওপিয়া এপ্রিল মাসে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। দেশটিতে খেলার মাঠ এবং স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বড় জমায়েত এবং খেলাধুলার ইভেন্ট নিষিদ্ধ হয়ে গেছে এবং গণপরিবহনেও মানুষের সংখ্যা হ্রাস করা হয়েছে। তবে ব্যবসা বাণিজ্য, দোকানপাট খোলা আছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৫ হাজারেরও বেশি লোক ভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত হয়েছে এবং এর মধ্যে মারা গেছে ৮১ জন।

সূত্র: বিবিসি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *