প্রচ্ছদ

শততম বাল্য বিয়ে বন্ধ করলেন বেলকুচির ইউএনও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম:  সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দায়িত্ব পালন অবস্থায় আড়াইশ বাল্যবিয়ে বন্ধের রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পান। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকেও বাল্যবিয়ে বন্ধে অভিযান থেমে থাকেনি তার। এরই ধারাবাহিকতায় গত এগারো মাসে বাল্যবিয়ে বন্ধের সেঞ্চুরি পূরণ করলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান। 

শুক্রবার (১৮ জুন) গভীর রাতে বেলকুচি পৌর এলাকার চালা মধ্যপাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাল্যবিয়ে বন্ধের মধ্য দিয়ে ইউএনও হিসেবে ১১ মাসে একশো বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন তিনি। এ নিয়ে সহকারী কমিশনার ও ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি মোট ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধের রেকর্ড গড়েন। 

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০২০ সালের জুলাই মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হয়ে আসেন আনিসুর রহমান। জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অঞ্চল এ উপজেলার দায়িত্ব পাওয়ার পর নিয়মিত কাজগুলোর ফাঁকে বাল্যবিয়ের খবর পেলেই ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দিয়ে ছুটে যান তিনি। কনের বাবা-মাকে কুফল সম্পর্কে বুঝিয়ে বন্ধ করেন বাল্যবিয়ে। এভাবে ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২১ এর ১৭ জুন পর্যন্ত একশো বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন তিনি। ইউএনও আনিসুর রহমানের হস্তক্ষেপে অনেক স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পায়। 

এর আগে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) দায়িত্ব পালনকালে ২১৬টি এবং একই পদে চৌহালী উপজেলায় দায়িত্ব পালকালে আরও ৩৪টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন। এ নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলায় মোট ৩৫০টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেছেন তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান শনিবার (১৯ জুন) দুপুরে বলেন, বাল্যবিয়ে আমাদের দেশের বড় একটি সমস্যা। এটি একটি সামাজিক অভিশাপ। বাল্যবিয়ের ফলে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার বেড়ে যায়। বাল্যবিয়ের কারণে পারিবারিক ও সামাজিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত সৃষ্টি হয়ে সমাজে অশান্তি বেড়ে যায়। উন্নত দেশ গড়তে হলে অবশ্যই বাল্যবিয়ের মতো সামাজিক অভিশাপ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমি যেখানেই থাকি, সে উপজেলাকেই বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে কাজ করি। 

এরই ধারাবাহিকতায় তাঁতসমৃদ্ধ বাণিজ্যিক অঞ্চল বেলকুচি উপজেলাকে বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে আমি সচেষ্ট রয়েছি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের সহায়তায় বেলকুচিকে অবশ্যই বাল্যবিয়ে মুক্ত করতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *