খেলাধুলা

শততম টি-টোয়েন্টিতে নাঈম-সৌম্যর ফিফটিতে জয় বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: তিন ফরম্যাটেই শততম ম্যাচে জয় পেল বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে শততম ওয়ানডে আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্ট জয়ের পর আজ শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় এসেছে ৮ উইকেটে। একাদশে ছিল তরুণদের প্রাধান্য। এক সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কোনো সিনিয়র নেই। মাঠে পারফর্মও করেছেন জুনিয়ররাই। তামিমের অনুপস্থিতিতে রেকর্ড ওপেনিং জুটি উপহার দিয়েছেন সৌম্য সরকার আর মোহাম্মদ নাঈম। তরুণদের হাত ধরেই সিরিজের শুরুটা দারুণ হলো টাইগারদের।

শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রান তাড়ায় নেমে বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দিয়েছেন মোহাম্মদ নাঈম এবং সৌম্য সরকার। শুরুটা বেশ সাবধানী ছিল। চতুর্থ ওভারে এনগ্রাভার বলে তিন চার মারেন নাঈম। পঞ্চম ওভারে লুক জঙ্গুইকে মিড উইকেট দিয়ে দর্শনী ছক্কা মেরে হাত খোলেন সৌম্য। ৭.১ ওভারে তাদের জুটি পঞ্চাশ ছাড়িয়ে যায়। এক পর্যায়ে দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়ে ফেলেন দুজন। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওপেনিং জুটি ছিল ৯২। গত বছর ঢাকায় এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ওই জুটি গড়েছিলেন তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। আজ সেটা ছাড়িয়ে গেলেন সৌম্য-নাঈম।

১৪তম ওভারে জুটিতে একশ রান চলে আসে। ৪৫ বলে ৪টি বাউন্ডারি এবং ২টি ছক্কায় ক্যারিয়ারের ৪র্থ ফিফটি তুলে নেন সৌম্য সরকার। অবশেষে ১০২ রানে সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ওপেনিং জুটি। সিরিয়াল ব্রেক করে তিনে নামেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। নাঈম ৪০ বলে নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন। এরপরেই মাহমুদউল্লাহ ১৫ রানে রান-আউট হন। উইকেটে আসেন সর্বশেষ ওয়ানডে জয়ের অন্যতম নায়ক সোহান। আজও তিনি দারুণ ব্যাট করেছেন। ১৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন নাঈম। তিনি ৫১ বলে ৭ চারে ৬৬* রানে অপরাজিত থাকেন। নুরুল অপরাজিত থাকেন ৮ বলে ১ চার ১ ছক্কায় ১৬* রানে। ৮ উইকেটে জিতে যায় বাংলাদেশ।

এর আগে হারারে স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে জিম্বাবুয়ে দল ১৯ ওভারে ১৫২ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে জিম্বাবুয়ের দলীয় ১০ রানেই প্রথম আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। ওই ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরে পঞ্চম বলে ক্যাচ দেন টাডিওয়ানাশে মারুমানি (৭)। আরেক ওপেনার মাধভেরেকে (২৩) ফেরান সাকিব।  বিধ্বংসী ব্যাট করছিলেন রেগিস চাকাভা। ২২ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ৪৩ রান করা এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যন রান-আউট হয়ে যান। ৯১ রানে তৃতীয় উইকেট পতন। ১ রানের ব্যবধানে শরীফুল ফেরান বিপজ্জনক অল-রাউন্ডার সিকান্দার রাজাকে (০)।

এরপর মঞ্চে সৌম্য সরকার। তার করা চতুর্দশ ওভারের দ্বিতীয় বলে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে পা দেন মুসাকান্দা (৬)। একপ্রান্ত আগলে ভালোই হাত চালিয়ে খেলছিলেন ডিওন মেয়ার্স। ২২ বলে ৩৫ রান করা অভিষিক্ত এই ব্যাটসম্যানকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন শরীফুল। ইনিংসের ১৮তম ওভারে এসে জোড়া শিকার ধরেন সাইফউদ্দিন। ফিরে যান লুকি জঙ্গুই (১৮) এবং রায়ান বার্ল (৪)। শেষটা ছেঁটে দেন মুস্তাফিজ। ৪ ওভারে মাত্র ৩১ রান দিয়ে দ্য ফিজ নেন ৩ উইকেট। সাইফউদ্দিন আর শরিফুল নেন ২টি করে উইকেট। ১টি করে নেন সাকিব-সৌম্য।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

জিম্বাবুয়ে: ১৯ ওভারে ১৫২ (মাধেভেরে ২৩, মারুমানি ৭, চাকাভা ৪৩, মায়ার্স ৩৫, রাজা ০, মুসাকান্দা ৬, বার্ল ৪, জঙ্গুয়ে ১৮, মাসাকাদজা ৪*, এনগারাভা ০, মুজারাবানি ৮; সাইফ ৪-০-২৩-০, মুস্তাফিজ ৪-০-৩১-৩, সাকিব ৪-০-২৮-১, শরিফুল ৩-০-১৭-২, মেহেদি ১-০-১৮-০, মাহমুদউল্লাহ ১-০-১৪-০, সৌম্য ২-০-১৮-১)

বাংলাদেশ: ১৮.৫ ওভারে ১৫৩/২ (নাঈম ৬৩*, সৌম্য ৫০, মাহমুদউল্লাহ ১৫, সোহান ১৬*; মুজারাবানি ৩.৫-০-১৯-০, মাধেভেরে ৩-০-২৪-০, এনগারাভা ৪-০-৪৬-০, জঙ্গুয়ে ৩-০-২৮-০, রাজা ২-০-১৬-০, মাসাকাদজা ৩-০-২০-০)  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *