নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু বাংলা: একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমারের নিষিদ্ধ সংগঠন ‘আরসা’ কর্তৃক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের নিজস্ব মুদ্রা ছড়িয়ে দেয়ার বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে অন্য কোনও মুদ্রা চালু করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। আশ্রিত রোহিঙ্গারা এই রাষ্ট্রদ্রোহিতা করার দুঃসাহস পায় কী করে। তারা আক্ষরিক অর্থেই বাংলাদেশের জন্য নানা ক্ষতিকর কাজে লিপ্ত হয়ে অকৃতজ্ঞের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’ আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ন্যাপের শীর্ষ এই দুই নেতা এমনটাই জানিয়েছেন।
তারা বলেন, ‘একসঙ্গে এতসংখ্যক বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। সীমিত সম্পদ ও অতি অপ্রতুল বাসযোগ্য ভূখণ্ড সত্ত্বেও মানবতার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ায়। সেই রোহিঙ্গারা এখন শুধু অকৃতজ্ঞ নয়, কৃতঘ্ন আচরণ করছে। নিজস্ব মুদ্রা চালুর মত ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে।’
নেতৃদ্বয় বলেন, ‘রোহিঙ্গা শিবিরগুলো হত্যা, ধর্ষণ, মানবপাচার, চাঁদাবাজি, অস্ত্রপাচার ও মাদকপাচারের ভয়ঙ্কর আখড়ায় পরিণত হয়েছে। রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তরা এ দেশের মানুষকেও হত্যা করছে। পাসপোর্ট, এনআইডি জালিয়াতি- এমনকি বিদেশে গিয়ে বাংলাদেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাঙালিরাও মিলেমিশে মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারের ভয়াবহ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে। রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্রের চাহিদা এতই বাড়ছে যে বাইরে থেকে আসা অবৈধ অস্ত্রে চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। তাই রোহিঙ্গা শিবিরের পাহাড়েও অস্ত্রের কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে।‘
তারা আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এমন মুদ্রা প্রচলনের বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য হুমকি। সাধারণত কোনো দেশ প্রতিষ্ঠা লাভের পর তার নিজের মুদ্রা চালু করে থাকে। একটি জঙ্গি সংগঠন কেন মুদ্রা প্রচলন করল? বিষয়টি সন্দেহজনক। বাংলাদেশ সরকারের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। একই সাথে মুদ্রা প্রচলনের সাথে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
ন্যাপের শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরসার নতুন মুদ্রা দিয়ে লেনদেন শুরু হওয়া কোনও শুভ লক্ষণ নয়। একই সাথে মুদ্রা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচরনা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছাড়া অন্য কিছুই নয়। কিছু দিনের মধ্যে আরসা নিয়ন্ত্রিত সবগুলো ক্যাম্পে নতুন এ মুদ্রা চালু হবে যা দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি হতে পারে। সবার অনুধাবন করা উচিত আফগানিস্তান কিংবা পাকিস্তানে উগ্রবাদের উত্থান যেমন আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি, তেমনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তের নিরাপত্তাহীনতা, জঙ্গি সংগঠন আরসা’র কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে তাদের নিজস্ব মুদ্রা ছেড়ে দেয়া শুধু বাংলাদেশ নয়- গোটা দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের জন্য নিরাপত্তার হুমকি তৈরি করতে পারে।’
আরো পড়ুন:
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে দক্ষ ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে সার্চ কমিটি চায় জাসদ