প্রচ্ছদ

রেলের উন্নয়ন কাজের তদারকি করতে চান নির্বাচনী এলাকার এমপিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: নিজ নির্বাচনী এলাকার রেলওয়ের উন্নয়নকাজের তদারকি নিজেরাই করতে চান রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। এজন্য তারা তাদের এলাকায় রেলওয়ের উন্নয়নকাজের তথ্য চেয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কাছে। মঙ্গলবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় বৈঠকের কার্যপত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য ও রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, শফিকুল ইসলাম শিমুল, শফিকুল আজম খান, গাজী মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ ও নাদিরা ইয়াসমিন জলি।

বৈঠকের কার্যপত্রে দেখা গেছে, আগের বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সুপারিশ করেন যে, নির্বাচনী এলাকার রেলওয়ের উন্নয়নকাজের তদারকি করবেন তারা। সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি হিসেবে গতকাল মঙ্গলবারের বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচনী এলাকায় রেলওয়ের উন্নয়নকাজের বিষয়ে তথ্য স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে সরবরাহ করা হবে। সংশ্নিষ্ট প্রকল্প পরিচালকরা সংসদ সদস্যদের তদারকি কাজে সহযোগিতা করবেন বলেও মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

আগের বৈঠকের কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, কমিটির সভাপতি নিজেই এ প্রসঙ্গ বৈঠকে উত্থাপন করেন। বৈঠকে তিনি বলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা রেলওয়ের উন্নয়নে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের নির্বাচনী এলাকার লোকজন যাতে ভবিষ্যতেও জনপ্রতিনিধিদের কীর্তি স্মরণ রাখে, সেজন্য তাদের নির্বাচনী এলাকার স্টেশনগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আধুনিকায়নের নির্দেশনা দেওয়া দরকার। এ সময় তিনি আশির দশকে নির্মিত চট্টগ্রাম রেলস্টেশন এখনও জরাজীর্ণ জানিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন।

এ সময় কমিটির সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর চট্টগ্রাম ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষার্থীদের যাতায়াত বেশি এমন স্টেশনগুলোর প্ল্যাটফর্ম উঁচু করার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম স্টেশনটি অত্যন্ত নিম্নমানের মনে হয়। বাসস্টেশনও এর চেয়ে ভালো।

বৈঠকে জানানো হয়, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে সাত হাজার ৬৪৮ টন স্ক্র্যাপ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার ৯৬৫ টন  স্ক্র্যাপ বিক্রির দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পাঁচ হাজার ৬৮৩ টন বিক্রির দরপত্র আহ্বানের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া ৩৮৭টি খালি ড্রাম বিক্রির এক লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৪ টাকা জমাদানের অপেক্ষায় আছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে স্ক্র্যাপ মালামাল বিক্রি করে পূর্বাঞ্চল ৩৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ও পশ্চিমাঞ্চল ১২ কোটি ২৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছে।

অন্যদিকে, রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে পাঁচ হাজার ৮৭৪ টন স্ক্র্যাপ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার ৩৪৩ টন স্ক্র্যাপ বিক্রির দরপত্র খোলার অপেক্ষায় রয়েছে। এক হাজার ৮১৪ টন বিক্রির দরপত্র আহ্বানের অপেক্ষায় রয়েছে। এ ছাড়া ৩৮৭টি খালি ড্রাম বিক্রির এক লাখ ৫৫ হাজার ৫৯৪ টাকা জমাদানের অপেক্ষায় আছে। ৭১৭ টন স্ক্র্যাপ বিক্রির অর্থ জমাদানের অপেক্ষায় আছে।

ঠিকাদার নির্বাচনে প্রতিযোগিতার সুপারিশ

এদিকে বৈঠকে সংসদীয় কমিটি রেলওয়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন ও সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশের ওপর নির্ভর না করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্বাচনের সুপারিশ করেছে। কমিটি রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্টের প্রকল্প গ্রহণের আগে সম্ভাব্যতা যাচাই করে লাভজনক প্রকল্প নেওয়ার সুপারিশ করে। কল্যাণ ট্রাস্টের নিজস্ব অর্থ ব্যয় না করে শেয়ারিং অথবা জয়েন্টভেঞ্চার পদ্ধতিতে অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুপারিশ করে কমিটি। রেলওয়ের  স্ক্র্যাপ  পরিমাপের ক্ষেত্রে স্কেল ব্যবহার এবং ক্যারেজ মেরামতের ক্ষেত্রে মানসম্মত স্টিল ও অন্যান্য সামগ্রী ব্যবহারের পরামর্শ দেয় কমিটি।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *