ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: অনেক অনেক কাল আগের কথা। এক দেশে ছিল এক রাজা, এক রানি আর তাদের ছোট্ট রাজকন্যা…। রাজা, রানি, রাজ্যের এমন বহু রূপকথার গল্প শুনতে শুনতেই বড় হয়েছি আমরা। যেমন রাপানজেল উঁচু দুর্গে থাকত। যেখান থেকে বেরোনোর কোনো পথ ছিল না ছোট্ট একটা জানালা ছাড়া। রাপানজেলের মা-রূপী ডাইনি তার লম্বা সোনালি চুল বেয়ে দুর্গে ওঠানামা করত। এ রকম গল্প শুনে ছোটবেলায় খুব অবাক হলেও এখন বুঝি এগুলো তো স্রেফ রূপকথা। সবই কাল্পনিক। কল্পনার জগতে রাপানজেল উঁচু দুর্গে থাকতেই পারে। রাজা-রানিদের থাকতেই পারে ইয়া বিশাল প্রাসাদ। কিন্তু বাস্তবে এমন কিছু নেই, তা আমরা সবাই জানি।
পোল্যান্ডের দুই স্থপতি শটিনসি ও জালেসকির হয়তো এই ব্যাপারটা ভাবিয়েছে। রূপকথার গল্পগুলো বাস্তবে থাকলে কতই না মজা হতো। তাই এই দুজন স্থপতি একটি বাড়ি বানাবেন বলে ঠিক করলেন। একদম রূপকথার গল্পের বাড়ির মতো। কিন্তু একেক গল্পে তো একেক রকম বাড়ি। কোনোটা বিশাল প্রাসাদ, কোনোটা রাপানজেলের মতো দুর্গ, আবার কোনোটা স্নো হোয়াইটের বামনদের কুঁড়েঘর। তাই তারা বাড়ির নকশা হিসেবে বেছে নিলেন পোলিশ রূপকথার গল্পের বই থেকে ভিন্ন এক বাড়ির ছবি। পোলিশ আঁকিয়ে জ্যান মারসিন শ্যানসার ও পার ডালবার্গের আঁকা অদ্ভুত এক বাড়ির ছবি মনে ধরে তাঁদের। সেই অনুযায়ী শুরু হয় কাজ।
২০০৪ সালে পোল্যান্ডের সোপোট শহরে ৪৩ হাজার বর্গফুটের এই বাড়ি বানানোর কাজ শেষ হয়। অদ্ভুত এই রূপকথার গল্পের বাড়ি দেখলে মনে হবে দেয়াল, দরজা, জানালা সব এখনই বুঝি গলে পড়ে যাবে। বাইরে থেকে দেখতে আঁকাবাঁকা হলেও ভেতরটা সাধারণ বাড়ির মতোই। আদতে এটি একটি শপিং মল। এমন আকর্ষণীয় শপিং মলে রয়েছে সিনেমা হল, রেস্তোরাঁসহ অসংখ্য দোকানপাট। বাড়ির এই আঁকাবাঁকা নকশার জন্য পোলিশ ভাষায় এর নামকরণ করা হয়েছে ‘শিভি দোমেক’, যার অর্থ আঁকাবাঁকা বাড়ি। এই বাড়ি বাইরে থেকে দেখতে যতটা সুন্দর, ভেতর থেকেও বেশ চমৎকার। রাতের বেলার আলোকসজ্জায় এই বাড়ি যেন নিয়ে যায় রূপকথার রাজ্যে।
আর এভাবেই শিভি দোমেক হয়ে ওঠে বিদেশি পর্যটকদের পছন্দের স্থান। আর পোল্যান্ডের বাসিন্দারাও ছুটির দিনগুলোতে সেখানে বেড়িয়ে, সিনেমা দেখে, আড্ডা দিয়ে, সেলফি তুলে সুখে–শান্তিতে দিন কাটায়।