খেলাধুলা

রুটের তৃতীয় সেঞ্চুরি, চাপে ভারত

ক্রীড়া প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: সেঞ্চুরি করা যেন কত সহজ! অন্তত জো রুটকে দেখলে এখন এমনটাই মনে হয়। মাঠে নামলেই ইংল্যান্ড অধিনায়ক করে ফেলছেন সেঞ্চুরি। ভারতের বিপক্ষে প্রথম দুই টেস্টে ছিল দুটি শতরান, এবার যোগ হলো আরেকটি। তার দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি ও টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে ভারতকে রান পাহাড়ে চাপা দেওয়ার আয়োজন সেরে ফেলল ইংল্যান্ড।

হেডিংলি টেস্টের দ্বিতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ডের রান ৮ উইকেটে ৪২২। আগের দিন ভারতকে ৭৮ রানে গুঁড়িয়ে দেওয়া দল এগিয়ে এখন ৩৪৫ রানে।

আগের দুই টেস্টে টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেও এবার প্রথম চার ব্যাটসম্যানের দারুণ পারফরম্যান্সই ইংল্যান্ডকে এনে দেয় চারশ ছাড়ানো সংগ্রহ। জো বার্নস ও হাসিব হামিদ ফিফটি করেন আগের দিনই। এ দিন রুটের সঙ্গে রানের মেলায় যোগ দেন টেস্ট দলে ফেরা দাভিদ মালানও।

১২১ রানের ইনিংস খেলে সবচেয়ে বড় অবদান যথারীতি রুটের। গত পাঁচ ইনিংসে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি, এই বছরে ষষ্ঠ। ইংল্যান্ডের হয়ে এক পঞ্জিকাবর্ষে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডে তিনি স্পর্শ করেন ডেনিস কম্পটন ও মাইকেল ভনকে।

বিনা উইকেটে ১২০ রান নিয়ে বৃহস্পতিবার দিন শুরু করা ইংল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। আর ১৫ রান যোগ করতেই ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।

দিনের শুরুতে উইকেটে আর্দ্রতা ছিল খানিকটা। মোহাম্মদ শামির দুর্দান্ত এক ডেলিভারি উড়িয়ে দেয় ররি বার্নসের বেলস। ৫২ রানে দিন শুরু করা ওপেনার ফেরেন ৬১ রানে।

আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান হাসিব হামিদ সাবধানী ব্যাটিংয়ে কাটিয়ে দেন প্রথম ঘণ্টা। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। তাকে ৬৮ রানে থামায় রবীন্দ্র জাদেজার দারুণ এক ডেলিভারি।

ইংল্যান্ড অবশ্য তাতে চাপে পড়েনি। তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দাভিদ মালান শুরু করেন মোহাম্মদ সিরাজকে টানা দুটি চারে। সাদা পোশাকে আবার মানিয়ে নিতে খুব একটা সময় নেননি টি-টোয়েন্টির এক নম্বর ব্যাটসম্যান।

রুট তো যেন ড্রেসিং রুম থেকে থিতু হয়েই মাঠে গিয়েছিলেন। উইকেটে নেমেই খেলতে থাকেন দারুণ সব শট। দ্রুত বাড়তে থাকে ইংল্যান্ডের লিড।

সময়ের সঙ্গে উইকেট ক্রমেই হয়ে ওঠে ব্যাটিংয়ের জন্য সহজ। রুট ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৭ বলে। মালানের ফিফটি আসে ৯৯ বলে। তাদের জুটির শতরান হয়ে যায় ১৩৮ বলে। দ্বিতীয় নতুন বলেও ভারত দেখা পাচ্ছিল না উইকেটের।

এক পর্যায়ে দুজনেরই চোখ ছিল সেঞ্চুরি। কিন্তু চা বিরতির ঠিক আগে বিপত্তি। সিরাজের লেগ স্টাম্পের বলে আলতো ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন মালান। তার ফেরার ইনিংস থামে ৭০ রানে। রুটের সঙ্গে জুটি শেষ হয় ১৩৯ রানে।

মালান না পারলেও ঠিকই তিন অঙ্কে পা রাখেন রুট। ১২৪ বলে পৌঁছে যান শতরানে।

২৩ টেস্ট সেঞ্চুরিতে এখন তিনি কেভিন পিটারসেনের পাশে। ইংল্যান্ডের হয়ে তাদের দুজনের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি কেবল অ্যালেস্টার কুকের, ৩৩টি।

কুকের আরেকটি রেকর্ড অবশ্য ছুঁয়েই ফেলেন রুট। ইংল্যান্ডের নেতৃত্বে দুজনের ১২ সেঞ্চুরি এখন যৌথভাবে রেকর্ড।

টপ অর্ডারদের রান করার এই ইনিংসে ব্যর্থ ইংলিশ মিডল অর্ডার। জনি বেয়ারস্টো ২৯ রান করে আউট হন স্লিপে বিরাট কোহলির অসাধারণ ক্যাচে। জস বাটলারকে দুই অঙ্কে যেতে দেননি শামি।

এরপর রুটও যেতে পারেননি বেশিদূর। জাসপ্রিত বুমরাহর ভেতরে ঢোকা বল ব্যাটে-প্যাডের ফাঁক গলে এলোমেলো করে দেয় তার স্টাম্প। ঝকঝকে ইনিংসটি শেষ হয় ১৬৫ বলে ১৪ চারে ১২১ করে।

পরের ওভারেই জাদেজাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মিড অনে ধরা পড়েন মইন আলি (৮)।

৩৩ রান তুলতে ৪ উইকেট হারানো দল শেষ বেলায় হারায় স্যাম কারানের উইকেটও। তবে দারুণ কয়েকটি শটে রান বাড়ান ক্রেইগ ওভারটন (২৪*)। ইংলিশরা তাই মাঠ ছাড়ে ভারতকে চাপে রাখার স্বস্তিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত ১ম ইনিংস: ৭৮

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১২০/০) ১২৯ ওভারে ৪২৩/৮  (বার্নস ৬১, হামিদ ৬৮, মালান ৭০, রুট ১২১, বেয়ারস্টো ২৯, বাটলার ৭, মইন ৮, কারান ১৫, ওভারটন ২৪*, রবিনসন ০*; ইশান্ত ২২-০-৯২-০, বুমরাহ ২৭-১০-৫৮-১, শামি ২৬-৭-৮৭-৩, সিরাজ ২৩-৩-৮৬-২, জাদেজা ৩১-৭-৮৮-২)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *