আইন আদালতজাতীয়সর্বশেষ

রমজানের চাহিদায় দ্বিগুণ ছোলা আমদানি

রমজানের চাহিদায় দ্বিগুণ ছোলা আমদানি

রমজান আসার আগে থেকেই ছোলা নিয়ে ব্যাপক মাতামাতি হয়, এবং একারণেই এবার রমজানের চাহিদায় দ্বিগুণ ছোলা আমদানি। পাইকারি বাজারে শবেবরাতের আগে থেকেই শুরু হয় ব্যাপক বেচাকেনা।

রমজানের সময় বাজার নিয়ন্ত্রণে চলেন প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এবার ছোলার বাজার নিয়ে কোনো মাতামাতিই নেই।

অবস্থা এমন—ছোলার পাইকারি বাজারে ক্রেতা নেই।
মাঝখানে গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী ছোলার বাজার নিয়ন্ত্রণে শুল্ক ছাড়ের কথা বলেছিলেন কিন্তু বাস্তবে ছোলায় কোনো ধরনের শুল্কই নেই। পাইকারি বাজারে এখন ছোলা বিক্রি হচ্ছে কেজি ভালো মানের ৬৫ টাকা, সাধারণ মানের ৬২ টাকা। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

ছোলার পাইকারি বাজারে বেচাকেনা নেই দেখে অলস সময় পার করছেন খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা। জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ আড়তদার কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি সোলায়মান বাদশা কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনটি কারণে ছোলার দামে ধস নেমেছে। একটি হচ্ছে, বিপুল পরিমাণ আমদানি। দ্বিতীয়ত, সরকারের বাজার তদারকি তৃতীয়ত, পণ্যের দাম আরো কমে যাওয়ার শঙ্কায় দ্রুত বিক্রি।

তিনি বলেন, ‘মার্চে যে ছোলা এসেছে, সেগুলোর বুকিং কেজি ৭৫ টাকার মতো পড়ছে। আগের কেনা থাকায় ছোলা ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি সম্ভব হবে। এই কারণে ছোলার ক্রেতা নেই; আমরা অলস সময় পার করছি। অথচ শবেবরাতের আগেই প্রচুর বিক্রির কথা। ’

ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূলত ছোলার বিপুল আমদানির কারণেই বাজারে বিক্রিতে ধস নেমেছে। শুধু রমজানের এক মাসেই ছোলার চাহিদা থাকে ৭০ হাজার টনের বেশি। আর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি—দুই মাসেই ছোলা আমদানি হয়েছে এক লাখ ৩০ হাজার টন; রমজানের চাহিদার প্রায় দ্বিগুণ ছোলা দেশে পৌঁছেছে। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই জাহাজে করে ছোলা এসেছে ২৮ হাজার টন।

ছোলা আমদানি হয় প্রধানত অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা থেকে। আমদানি হয় খোলা জাহাজ এবং কনটেইনারে ভর্তি করেই এবং আসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই। কিছু ছোলা আসে মায়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে। পরে সেগুলো সড়কপথে দেশের বিভিন্ন্ন স্থানে পৌঁছে।

রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ছোলা আমদানি হয়েছিল এক লাখ পাঁচ হাজার টন। প্রতি মাসে ছোলা এসেছে গড়ে আট হাজার ৮২৬ টন। ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আট মাসে ছোলা এসেছে দুই লাখ ২০ হাজার টন। সেই হিসাবে প্রতি মাসে এসেছে গড়ে ২৭ হাজার ৫০০ টন। আগের বছরের তুলনা করলে প্রতি মাসে ছোলা এসেছে তিন গুণ বেশি।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে—এত ছোলা যায় কোথায়? জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জ আমদানিকারক পায়েল ট্রেডার্সের মালিক আশুতোষ মহাজন বলছেন, দেখুন দাদা, এখন বাজারে ছোলা বেচাকেনা একেবারেই নেই। দাম তো কমেছে, ক্রেতাও নেই। অনেক আমদানিকারকের ছোলা এখনো জাহাজ থেকে নামছে। এতে বাজারে একসঙ্গে প্রচুর ছোলা আমদানি হয়েছে; আর আগের বছরেরও অবিক্রিত ছোলা রয়ে গেছে। ফলে বাজার একেবারেই মন্দা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *