ধূমকেতু রিপোর্ট : বাংলাদেশে রফতানি আয়ে সুবাতাস বইছে। চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও বৈশ্বিক অস্থিরতা মোকাবেলা সত্ত্বেও রফতানি আয় গতিশীল রয়েছে। প্রায় অর্ধশত খাতের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাট ও পাটজাত পণ্য ছাড়া সব খাতই ইতিবাচক ধারায় রয়েছে।

বিশেষ করে পোশাক খাতের (নিটওয়্যার, ওভেনগার্মেন্ট ও হোমটেক্সটাইল) পণ্য রফতানিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। যার ওপর নির্ভর করে সার্বিক রফতানি আয়ও বেড়েছে।

রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) বৃহস্পতিবার ( ১০ জানুয়ারি ) প্রকাশিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্যমতে, ছয় মাসে রফতানি খাতে নির্ধারিত আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৮৭৮ কোটি ৫০ লাখ ডলার হলেও প্রকৃতপক্ষে রফতানি আয় এসেছে ২ হাজার ৫০ কোটি ডলার।

লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এই আয় ১৭১ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলার বা ৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেশি। এটি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১ হাজার ৭৯১ কোটি ডলার থেকে বেশি।

ফলে অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ের হিসাব অনুযায়ী সার্বিক রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন, রফতানি খাতে গতিশীলতা বজায় রাখতে সরকারের নীতিসহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের বিশ্ববাজার জয় করার অদম্য চেষ্টার কারণে এ সাফল্য ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।

তারা আশা করছেন, আগামী দিনে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকবে। তা নিশ্চিত হলে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরজুড়ে পণ্য খাতে ৩ হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলারের সার্বিক লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।

ইপিবির তথ্যমতে, শুধু তৈরি পোশাক খাত থেকেই চলতি অর্থবছর রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ২৬৯ কোটি ডলার।

২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ হাজার ৫৭৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তবে ছয় মাসের অর্জিত আয় পর্যালোচনায় দেখা যায়, তা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ হাজার ৭০৮ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

অর্থাৎ রফতানি আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সাড়ে আট শতাংশ (৮ দশমিক ৫১ শতাংশ) বেশি। ফলে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পোশাক খাতে সার্বিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ১৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের ৬ মাসে ওভেন গার্মেন্ট থেকে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। নিটওয়্যার খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আয় হয়েছে ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। হোমটেক্সটাইলে প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যান্য খাত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বেশি আয় এবং প্রবৃদ্ধি হয়েছে মোট ৩৯টি খাতে। তবে বছরের অর্ধেক সময় পেরিয়ে গেলেও পাট ও পাটজাত পণ্য খাতে রফতানি আয়ের নেতিবাচক পরিস্থিতি দূর হয়নি। এ খাতে অর্জিত আয় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং প্রবৃদ্ধি ২৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ কম হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *