ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: মাঝেমধ্যেই শতবর্ষী গাছের কথা সংবাদমাধ্যমের খবরে উঠে আসে। এমন অনেক গাছ রয়েছে, যেগুলো কয়েকশ বছরের পুরোনো। তবে আফ্রিকায় এমন এক প্রজাতির গাছ রয়েছে, যেগুলো মরুর বুকে হাজার বছর বেঁচে থাকতে পারে। ওয়েলউইটশিয়া নামের ওই গাছের যেন মৃত্যু নেই।
ওয়েলউইটশিয়া নিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। এরপর এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট। এসব প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ওয়েলউইটশিয়া গাছের নামকরণ করা হয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞানী ফ্রেডেরিখ ওয়েলউইটশের নামানুসারে। আফ্রিকার দেশ অ্যাঙ্গোলার দক্ষিণাঞ্চল ও নামিবিয়ার উত্তরাঞ্চলের মধ্যবর্তী নামিব মরুভূমিতে এই গাছের দেখা পাওয়া যায়। এই মরুভূমি এমনই শুষ্ক আর রুক্ষ জায়গা, যেখানে জীবন টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব। ধারণা করা হয়, এই মরুভূমি বিশ্বের প্রাচীনতম মরুভূমি।
স্থানীয় ভাষায় ওয়েলউইটশিয়াকে ডাকা হয় ‘টুইব্লারকানিয়েদুদ’ নামে। এই নামের অর্থ হলো ‘দুটি পাতা, যা কখনো মরে না’। বিজ্ঞানীরা নামিব মরুভূমিতে কিছু ওয়েলউইটশিয়া গাছের সন্ধান পেয়েছেন, যেগুলোর বয়স তিন হাজার বছরের বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থাৎ সেই লৌহ যুগ থেকে এগুলো দুটি পাতা নিয়েই বড় হচ্ছে। তাই বলে যে এই গাছের পুরো জীবনে দুটি পাতা থাকে, তা কিন্তু নয়। মরুঝড়ের আঘাতে পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে কিংবা ক্ষুধার্ত কোনো প্রাণী পাতা খেয়ে ফেললে গাছটিতে আবারও দুটি পাতার জন্ম হয়। একই সঙ্গে থেকে যায় আগের পাতা দুটির অংশবিশেষ। এভাবে একসময় গাছটির চেহারা অনেকটা অক্টোপাসের মতো হয়ে যায়।
সম্প্রতি ওয়েলউইটশিয়া গাছের বৈশিষ্ট্যগত কিছু রহস্য উন্মোচন করেছেন গবেষকেরা। এ নিয়ে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারকমিউনিকেশনস একটি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। এতে ওয়েলউইটশিয়া গাছের দীর্ঘজীবী হওয়া, অনন্য আকৃতির কারণসহ কিছু বিষয় উঠে এসেছে। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন চীনের শেনজেনের ফেইরি লেক বোটানিক্যাল গার্ডেনের উদ্ভিদবিজ্ঞানী তাও ওয়ান। তিনি বলেন, নামিব মরুভূমির উৎপত্তি প্রায় ৮ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে। ওই সময় ওয়েলউইটশিয়া গাছেরও বর্তমান চেহারার উদ্ভব হয়। সম্ভবত কোষ বিভাজনে কোনো ত্রুটির কারণে এই পরিবর্তন এসেছিল। বিশেষত ওই ত্রুটির কারণেই গাছটি প্রবল উত্তাপ আর শুষ্কতায় টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন করেছে।