মানুষ জীবন দীর্ঘ করতে কত কিছু করে তার কোনো শেষ নেই। কিন্তু তার নির্ধারিত সময়ে হায়াত ফুরিয়ে যায়। জীবনে সূর্যাস্ত নেমে আসে। কিন্তু কিছু আমল রয়েছে, যেগুলো করলে আল্লাহ তাআলা জীবনে বরকত দান করেন। হায়াত ও রিজিক বাড়িয়ে দেন।

আত্মীয়তার বন্ধন মানুষের হায়াত ও রিজিক বাড়ায়। বরকত আনয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু এসব আমরা হয়ত জানি না বা এ বিষয়ে গুরুত্ব দিই না।

আত্মীয়তার সম্পর্কে রিজিক-হায়াত বাড়ে

আত্মীয়তার বন্ধন আল্লাহর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি তার হায়াত ও রিজিক বৃদ্ধি করতে চায়, তাহলে তার উচিত— আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখা। আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন যে, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি— ‘যে ব্যক্তি তার রিজিক প্রশস্ত ও আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৫৯)

আনাস ইবনে মালেক (রা.) বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার রিজিক বাড়ুক এবং তার হায়াত দীর্ঘায়িত হোক, সে যেন আত্মীয়ের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে।’ (বুখারি, হাদিস : ৮/৪৯৮৬)

আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জাহান্নামে

মানুষের পার্থিব জীবনের মতো পরকালীন সুখ-শান্তিও আত্মীয়তার বন্ধনের সঙ্গে সম্পর্কিত। আত্মীয়ের সঙ্গে কখনো খারাপ আচরণ করতে নেই। তার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করতে নেই। আত্মীয় ও স্বজনের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করা ঘৃণ্য কাজ। এগুলোর মাধ্যমে এভাবে অনেকে জান্নাতের পথ বন্ধ করে দেয়।

মুহাম্মদ ইবনে মুতঈম (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬২৮৯)

সম্পর্ক রক্ষায় রাসুল (সা.)-এর তাগিদ

আল্লাহ তাআলার রহমত-বরকত পেতে হলে আত্মীয়তার সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে। কোনো অবস্থাতেই তাদের সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবে না। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। পাশাপাশি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গেও তার সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে যায়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক রহমানের মূল। সুতরাং যে তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে, আমিও তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখব। আর যে তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করব।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫৬৩)

আবদুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্নকারী থাকলে, তাদের ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হয় না।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ : ৬৩)

/জেড এইচ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *