ধূমকেতু রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৩০৯ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে এই আয় ১৯ শতাংশ বেশি।
পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, বিশ্ববাজারে দেশের তৈরি পোশাকের দাম না বাড়লেও সম্প্রতি দেশটি থেকে বাড়তি চাহিদা আসতে শুরু করেছে নতুন করে। তারা এই সময়ে আমেরিকা থেকে প্রচুর সাড়া পাচ্ছে।
ইপিবির হালনাগাদ পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়েছে যে দেশের তৈরি পোশাক খাতে গত পাঁচ বছরের সংস্কারকাজের অগ্রগতি এবং চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে সেখানকার বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের রপ্তানি আয় বাড়ছে।
বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া চীনে মজুুরি বাড়ায় সেখানে পোশাক তৈরিতে তেমন আগ্রহ নেই তাদের।
বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান জানান, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ এবং সংস্কারকাজের অগ্রগতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে কার্যাদেশ সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে গত মাসে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আয় হয়েছে ওভেন পোশাক প্রায় ২৩১ কোটি ডলার। আগের বছরের চেয়ে প্রায় ২৩ ভাগ বেশি।
এ সময় নিট পোশাকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ৮.৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রথম ছয় মাসে আয় এসেছে ৩০৯ কোটি ডলার। আর প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯.৮ শতাংশ।
গবেষণা পরিচালক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে তৈরি পোশাক খাতের সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল বর্তমান রপ্তানি প্রবৃদ্ধি এরই সুফল।
বিশেষ করে মার্কিন জোট অ্যালায়েন্স যে সুষ্ঠুভাবে কাজ শেষ করে চলে গিয়েছে সেটাও দেশের ব্র্যান্ড ও বায়ারদের বাংলাদেশ বাজার সম্পর্কে আস্থা তৈরি করেছে। একই সঙ্গে ভোক্তা পর্যায়েও আস্থা পৌঁছেছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষ বাজার ছিল যুক্তরাষ্ট্র। রানা প্লাজা ধসের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানি কমছিল। গত বছরের জানুয়ারিতে এই বাজারেও ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
তবে এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের মতো গতি ছিল না ইউরোপের বাজারে। এ সময় ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হয়েছে এক হাজার ৫৩ কোটি ডলার। সেখানে ব্যবসা বেড়েছে মাত্র ১০ শতাংশ।
আর এদিকে ব্র্রেক্সিট নিয়ে টালমাটাল থাকা যুক্তরাজ্য গত ছয় মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৮৭ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১.৩ শতাংশ।
এদিকে চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) রপ্তানি বেড়েছে ১৫.৬৫ শতাংশ। এ সময় ইইউভুক্ত দেশগুলোতে পোশাক রপ্তানি ৯.৯৮ শতাংশ বেড়েছে। একইভাবে কানাডায় ২০ শতাংশ এবং নতুন বাজারে ৩৬ শতাংশ পোশাক রপ্তানি বেড়েছে।