উন্নয়ন

মেট্রোরেলের প্রথম ৫ সেট ট্রেন ঢাকা পৌঁছাবে ২৩ এপ্রিল

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম:  রাজধানীর উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ৫ সেট ট্রেন চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ঢাকায় পৌঁছাবে। এ প্রকল্পের জন্য মোট ২৪ সেট ট্রেন তৈরি করছে জাপান। প্রতি সেট ট্রেনে দুই পাশে দুটো ইঞ্জিন আর মাঝে থাকবে চারটি করে কোচ।

ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, জাপানের ওবে বন্দর থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে ট্রেনটি রওনা দেওয়ার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের মোংলা বন্দর থেকে উত্তরায় মেট্রোরেলের ডিপোতে ট্রেনটি এসে পৌঁছাতে পারে ২৩ এপ্রিল।

তিনি আরও জানান, দেশে মেট্রোরেলের সেটগুলো আনার আগে ডিএমটিসিএলের একটি বিশেষজ্ঞ দলের সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য জাপানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দেশটিতে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় বিকল্প হিসেবে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে ডিএমটিসিএল।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানিয়েছে, তাদের পক্ষে ট্রেনগুলো পরিদর্শন করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি নামের একটি প্রতিষ্ঠান। পরিদর্শন কার্যক্রম ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করেছেন ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলোয় দেশে চলে আসবে। দ্বিতীয় সেট ট্রেনটি জাপান থেকে ১৫ এপ্রিল রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। সেটি ঢাকায় পৌঁছাতে পারে ১৬ জুন। আর তৃতীয় ট্রেনটি ১৩ জুন রওনা দিয়ে ১৩ আগস্ট পৌঁছাতে পারে। ট্রেনগুলো প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ট্রায়াল রান দ্রুত শুরু করা হবে।

এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, মেট্রোরেলের ট্রেনের ট্রায়াল রান শুরু করতে হলে ন্যূনতম তিনটি স্টেশন প্রস্তুত করে রাখা দরকার। সেখানে এরই মধ্যে পাঁচটি স্টেশন প্রস্তুত। ডিপো এলাকায় ট্রেনগুলো রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যও পর্যাপ্ত অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের যাত্রা শুরুর আশা করছেন তিনি।

মেট্রোরেলের ট্রেনগুলো বানাচ্ছে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি। সব মিলে ২৪ সেট ট্রেনের দাম পড়ছে ৩ হাজার ২০৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। শুল্ক ও ভ্যাট মিলিয়ে এসব ট্রেন বাংলাদেশে আনার পর মোট খরচ হবে ৪ হাজার ২৫৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।

ট্রেনগুলোয় ডিসি ১৫০০ ভোল্টেজ বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা থাকবে। স্টেইনলেস স্টিল বডির ট্রেনগুলোয় থাকবে লম্বালম্বি সিট। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে দুটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রতিটি বগির দুপাশে থাকবে চারটি করে দরজা। জাপানি স্ট্যান্ডার্ডের নিরাপত্তাব্যবস্থা সংবলিত প্রতিটি টেনের যাত্রী ধারণক্ষমতা হবে ১,৭৩৮ জন। ভাড়া পরিশোধের জন্য থাকবে স্মার্টকার্ড টিকিটিং ব্যবস্থা।

মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জুনে। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির সার্বিক অগ্রগতি ৫৭ শতাংশ। প্রকল্পের মোট ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা দিচ্ছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকারের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *