উন্নয়ন

মেট্রোরেলের কাজে অগ্রগতি অনেক : আগামী বছর চালুর লক্ষ্যে দিনরাত চলছে কর্মযজ্ঞ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পুরোদমে কাজ চলছে মেট্রোরেল প্রকল্পে। কাজ করছেন জাপানসহ বিদেশী পরামর্শক ও প্রকৌশলীরাও। ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পে উড়াল পথ বসেছে ১১ কিলোমিটার জুড়ে। আর রেললাইন বসেছে ৫ কিলোমিটার। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের গড় অগ্রগতি ৫০ দশমিক ৪০ শতাংশ। প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২১ সালের মধ্যেই মেট্রোরেল চালু করার চেষ্টা চলছে।

দিনরাতের কর্মযজ্ঞে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে মেট্রোরেলের একের পর এক স্টেশন। অনেকটাই প্রস্তুত ডিপো এলাকা, ওয়ার্কশপ ও বিরতিতে ট্রেন রাখার ছাউনি। উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে উড়ালপথ নির্মাণও প্রায় শেষ। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাপানে মেট্রোর ৫ সেট কোচ তৈরি শেষ হবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এসব কোচ দেশে এনেই তারা ট্রায়াল রান শুরু করতে চান।

মহামারি করোনাভাইরাস থমকে দিয়েছে পুরো পৃথিবীকে। তার আঁচড় কিছুটা লেগেছে এই প্রকল্পেও। তবে সংশ্লিষ্টদের দক্ষতা, আন্তরিকতা আর প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে এরই মধ্যে পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। কিছুটা বিলম্বিত হলেও দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজধানীবাসীকে স্বপ্নের মেট্রোরেল উপহার দিতে চায় সরকার।

মেট্রোরেল প্রকল্পে চলছে ব্যাপক কর্মজজ্ঞ। পুরো প্রকল্প জুড়ে শ্রমিক, প্রকৌশলীদের এমন কর্মতৎপরতা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হচ্ছে ৮টি প্যাকেজে। এর মধ্যে তিন ও চারে ৭৪ শতাংশ, ৫-এ ৪৮ শতাংশের কিছু বেশি আর সবশেষ প্যাকেজ ৮-এ প্রায় ৩১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।

বিদেশী বড় প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনা পরিস্থিতিতেও নির্মাণ অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এন ছিদ্দিক বলেন, আস্তে আস্তে লকডাউনটা উঠায় আমরাও আস্তে আস্তে খুলে দিচ্ছি। তখন কিন্তু আইসিপি ব্যবহার করে যে কাজগুলো দূরে বসে সুপারভাইস করা যায় সেই কাজগুলো শুরু করলাম। চার্টার্ড ফ্লাইটে যারা কনসালট্যান্ট আছেন, যারা কন্ট্রাক্টর আছেন আমরা তাদেরকে নিয়ে এসে কাজ শুরু করলাম।

প্রকল্প এলাকায় নির্মিত দুটি ফিল্ড হাসপাতাল বিদেশীদের আস্থা অর্জন করে।

ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, আমাদের এক্সিস্টিং স্থাপনাগুলোকে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে রূপান্তর করেছি। আমরা কোয়ারেন্টাইন সেন্টার এখানে রূপান্তর করেছি, তারপর আমরা ফিল্ড হাসপাতাল করেছি।

এমআরটি লাইন সিক্স অর্থাৎ দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণের অভিজ্ঞতা বাকি প্রকল্পগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করতে সহায়ক হবে বলে মনে করে ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ।

শহর যখন ঘুমায়, তখনও কর্মব্যস্ততা মেট্রোরেল প্রকল্পে। একজন বলেন, ঘুম বলে কোনও কথা নেই, কাজের কোনও বিরতি নেই।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশে রেললাইন বসানোর প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে ৫ কিলোমিটার অংশে। তবে রেলট্র্যাকের প্লিন্থ ঢালাই শেষ হয়েছে আড়াই কিলোমিটার। নির্মাণযজ্ঞের অর্থাৎ এলএন্ডটি কনস্ট্রাকশন ম্যানেজার মনোজ কুমার বলেন, তাপামাত্রার কারণেই এসব কাজ রাতে করা হয়।

মেট্রোরেল ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মাহফুজুর রহমান জানান, এ অংশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন সিস্টেম নির্মাণের কাজও চলছে পুরোদমে। একের পর এক এগোচ্ছে স্টেশন নির্মাণের কাজ।

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক বলেন, সিস্টেমের যন্ত্রপাতি যেগুলো আছে সেগুলোর অধিকাংশ আমাদের ডিপোতে এসে পৌঁছেছে। শেষের দিকে যে কাজগুলো করা কথা সেগুলোই এখন মূলত কাজ হচ্ছে। ইতোমধ্যে দুটি মেট্রো ট্রেনের কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। আর ৩টিরও অর্ধেক প্রায় শেষ। এটা হয়ে গেলেই দেশে আনতে পারব।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে পুরোপুরিভাবে মেট্রোরেল চালুর লক্ষে কাজ চলছে বলেও জানান এম এ এন ছিদ্দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *