খেলাধুলা

মুমিনুলের আক্ষেপের দিনে ২২৭ সংগ্রহ বাংলাদেশের

মুমিনুল হক যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, ততক্ষণই রানের চাকা ঘুরছিল দারুণ গতিতে। এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল, দীর্ঘ সময় পর সেঞ্চুরি পাবেন বাংলাদেশের সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক। আর মুমিনুলের ব্যাটে ভর করে ন্যূনতম আড়াইশ রানের কোটা পার করে ফেলবে বাংলাদেশও।

কিন্তু দুটোর কিছুই হলো না। প্রায় ১২ মাস পর শতকের সুযোগ পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারলেন না মুমিনুল। বরং আউট হয়ে ফিরলেন ৮৪ রান করে। এই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের দুই বল পর ইতি ঘটলো বাংলাদেশের ইনিংসও।

ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের তৃতীয় সেশনে এসে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অল আউট হয়ে মাঠ ছেড়েছে। মিরপুর শের ই বাংলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে আগে ব্যাটিং করতে নামা বাংলাদেশের পক্ষে মুমিনুল ছাড়া ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি আর কেউই।

মিরপুরে এদিন সকাল থেকে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছে বোলাররা। খেলা শুরু হওয়ার দ্বিতীয় ওভারের মাথায় তো ক্যাচও তুলে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ওপেনার জাকির হাসান। তবে উমেশ যাদবের বলে তুলে দেওয়া সেই ক্যাচ তালুবন্দী করতে পারেননি মোহাম্মদ সিরাজ। তবে ক্যাচ না নিতে পারলেও উমেশের সঙ্গে মিলে সিরাজ টাইগার ব্যাটসম্যানদের বেশ চাপেই রেখেছিলেন।

পরবর্তীতে এই দুইজনের সঙ্গে যুক্ত হন আরেক পেসার জয়দেব উনাদকাতও। টেস্ট অভিষেকের ১২ বছর পর আবারও এই ফরম্যাটের ক্রিকেটে মাঠে নামার সুযোগ পান এই বাঁহাতি ভারতীয় পেসার। আর মাঠে নেমেই টেস্টের প্রথম উইকেটও শিকার করেন অভিষেকের ১২ বছর পরে।

মাঠ থেকে বাড়তি বাউন্স আদায় করে উইকেট তুলে নেন উনাদকাত। ১৫ রান করা জাকির হাসান ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। নিজের ওপেনিং পার্টনারকে হারানোর ৪ বলের মাথায় প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন নাজমুল হোসেন শান্তও।

সকাল থেকে দারুণ খেলতে থাকা শান্ত অশ্বিনের বলে এলবির ফাঁদে পড়ে ২৪ রান করে থামতে বাধ্য হন। ৪ বলের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া টাইগারদের আবার স্থিরতা এনে দেন দুই অধিনায়ক মুমিনুল এবং সাকিব।

দুইজনে ৪৩ রানের জুটি গড়েন। তবে লাঞ্চ ব্রেক থেকে ফিরে মাঠে নামতেই ১ বলের মধ্যেই আউট হয়ে যান সাকিব। করতে পারেন মোটে ১৬ রান। পাঁচে নেমে মুশফিকুর রহিমও ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়ে ফেরেন তাড়াতাড়িই।

টেস্টে টানা চতুর্থবারের মতো বিশের ঘরে আউট হয়ে ফেরেন মুশি। করেন ২৬ রান। মুশফিকের বিদায়ের পর মাঠে নেমেই চালিয়ে খেলতে থাকেন লিটন। তবে ২৬ বলে ২টি চার ও ১টি ছয়ে ২৫ রান করে ফেরেন তিনিও।

টি ব্রেকের আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ বিরতিতে যায় ৫ উইকেটে ১৮৪ রানের স্কোর নিয়ে। তবে টি ব্রেক থেকে ফেরার পর আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি বাংলাদেশের ইনিংস।

মেহেদী হাসান মিরাজ ১৫, নুরুল হাসান সোহান ৬ রান করে বিদায় নিলে টেল এন্ডাররা মুমিনুলকে যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত মুমিনুলও ১৫৭ বলে ১২টি চার ও ১টি ছয়ে ৮৪ রান করে ফেরেন। টেস্ট ফরম্যাটে ১২ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেয়েছেন মুমিনুল।

ভারতের পক্ষে সবচেয়ে বেশি সফল বোলার ছিলেন পেসার উমেশ যাদব। ১৫ ওভারে মাত্র ২৫ রান দিয়ে এই পেসার তুলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। এছাড়াও ৪ উইকেট নিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনও। তবে তিনি ৩ এর বেশি ইকোনমিতে রান দিয়েছেন ৭১টি। ভারতের পক্ষে বাকি ২ উইকেট তুলে নেন অভিষেকের ১২ বছর পর আবার টেস্ট খেলতে নামা জয়দেব উনাদকাত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *