নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুসারে মুজিব জন্মশতবর্ষে এক ওয়েবিনার (অনলাইন সেমিনার) অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২ জুন রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত এই ওয়েবিনারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “Bangabandhu, Liberation War and Bangladesh : An Enquiry into the State of Nation and Generation”.
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন জবি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. অরুণ কুমার গোস্বামী।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত থেকে মূল্যবান বক্তব্য প্রদান করেন সদ্য যোগদানকৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক। বিশেষ অতিথির গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন জবি ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. কামালউদ্দীন আহমদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নিলুফার পারভীন।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. নুরে আলম আব্দুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. শামীমা বেগম।
ড. অরুণ কুমার গোস্বামীর নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সালে বরাদ্দকৃত স্বল্প বাজেটের গবেষণা কর্ম “Liberation War of 1971 and Bangladesh in 21st Century : An Enquiry into the State of Nation and Generation” এবং “Bangabandhu and Emergence of Bangladesh” শীর্ষক গবেষণা প্রকল্প প্রতিবেদন দু’টির সমন্বয়ে একটি গবেষণা গ্রন্থ প্রণয়ন প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই ওয়েবিনারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় রচিত ও উপস্থাপিত হয়।
এতে বলা হয়, “বাংলা ভাষা, বাঙালি জনগণ এবং বাংলাদেশ অন্তর্নিহিতভাবে সম্পর্কযুক্ত। এই তিনটি বাগধারার প্রতিটিরই আছে সুদীর্ঘ ও বিচিত্র ইতিহাস। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ছাড়া এই ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাই বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অভিন্ন সূত্রে গাঁথা।”
স্বাধীন বাংলাদেশের ৫০ বছর এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মের ১০০ বছরে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। দেশ স্বাধীনের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিল। কিন্তু তখনো বঙ্গবন্ধু সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি করতে পেরেছিল। দেশ ক্রমান্বয়ে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। জেলখানায় চার জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়। হত্যার মাধ্যমে এভাবে বাঙালি জাতি, মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনের প্রকৃত ইতিহাস বিকৃত এবং বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭৫ পরবর্তী প্রজন্ম দেশের বিকৃত ইতিহাস জেনেছে। গবেষণায় এই প্রজন্মের মনোভাব ও ধারণা জানার জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রশ্নমালার ভিত্তিতে পরিচালিত জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়েছে।
উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক কমিটি কর্তৃক সূচিত গবেষণা প্রকল্প প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার আয়োজনের এই ধারা অনুসরণ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগ আগামীতেও গবেষণা প্রকল্প প্রতিবেদনের ওপর সেমিনার আয়োজন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বিশেষ করে মুজিব জন্মশতবর্ষে এ ধরনের একটি ওয়েবিনার আয়োজনের জন্য উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দীন আহমেদ, ঢাবি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রফেসর ড. নিলুফার পারভীন এবং আলোচক ও অতিথিগণ জবি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের একাডেমিক কমিটি এবং গবেষক ড. অরুণ কুমার গোস্বামীর প্রশংসা করেন ও ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সহযোগী অধ্যাপক মেজবাহ-উল আজম সওদাগর, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সহকারী অধ্যাপক নঈম আক্তার সিদ্দিক, সঞ্চালনা করেন শরীফ নুরজাহান।