উন্নয়ন

মুক্তা চাষে সাফল্য : উপার্জনের নতুন পথে ঝুঁকছে বরগুনার যুবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: বরগুনায় ঝিনুকের মুক্তা চাষে সফলতা দেখে অনেকেই মুক্তা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। মুক্তা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। তার সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন মুক্তা চাষে আগ্রহী।

বরগুনা সদর উপজেলার কে. লতাবাড়িয়া গ্রামে ব্রাইট এগ্রো নামের একটি কৃষি খামার স্থাপন করেন নুরুল ইসলাম। এতে পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতা করেন তার ছোট ভাই টেকসই উপকূলীয় মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক কামরুল ইসলাম। এই এগ্রো ফার্মেই ২০১৯ সালে মাছের পাশাপাশি ঝিনুকের মুক্তা চাষের প্রকল্প হাতে নেন নুরুল ইসলাম। গড়ে তোলেন একটি প্রদর্শনী খামারও। জুয়েলারি, ঔষধ শিল্প, কসমেটিক্স, পেইন্টস ফরমুলেশনে মুক্তা ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আমাদের দেশে হাওড় ও বিলে প্রাকৃতিকভাবে মুক্তা পাওয়া গেলেও বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে।

মুক্তা চাষে আগ্রহী আবদুস সোবাহান বলেন, আমাদের প্রচুর প্রাকৃতিক জলাধার রয়েছে, যাতে ঝিনুক পাওয়া যায়। আমরা নুরুল ইসলাম ভাইয়ের প্রদর্শনী খামার দেখেছি। আমরা নিজেরাও মুক্তা চাষ করতে আগ্রহী। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এটা বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ সম্ভব।

জনাব নুরুল ইসলাম বলেন, পুকুর বা জলাশয়ে একই সঙ্গে মুক্তা এবং মাছ চাষ করে যে কোনো পরিবার অর্থনৈতকভাবে লাভবান হতে পারে। তিনি জানান, ব্রাইট এগ্রোর মুক্তা চাষ প্রকল্প দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন আসছে। ব্রাইট এগ্রোর পক্ষ থেকে হাতে-কলমে ঝিনুকের মুক্তা চাষের পদ্ধতি, কৌশল ও পরিচর্যার বিষয়ে আগ্রহীদের ধারণা দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ঝিনুক থেকে উৎপাদিত হয় ৬টি মুক্তা। বর্তমানে ৩ হাজারের বেশি মুক্তা উৎপাদিত হচ্ছে। এর মধ্যে গ্রিসে অবস্থানরত বাঙালিরা মুক্তা সংগ্রহের ব্যাপারে যোগাযোগ করছেন। আগামী নভেম্বর মাসে গ্রিসে প্রবাসী বাংলাদেশীদের চাহিদামতো ১ হাজার পিস মুক্তা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ ঝিনুকের মুক্তা চাষ প্রকল্প পরিদর্শন করে মুক্তা চাষের প্রশংসা করে বলেন, এ উদ্যোগ দেখে আমি খুবই আনন্দিত। এলাকার বেকার যুবকরা একটু উদ্যোগী হলে মুক্তা চাষ প্রকল্প থেকে তারা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *