লবণ ও যন্ত্রাংশের মধ্যে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে ট্রাকে করে ইয়াবার চালান আনছিলেন মাদক কারবারিরা। গোপন খবরের ভিত্তিতে আজ শুক্রবার রাজধানীর কুড়াতলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি ট্রাক থেকে ৫০ হাজার ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এর সঙ্গে জড়িত অভিযোগে মো. বাচ্চু মিয়া ও তাঁর শ্যালক সুলতান মাহমুদকে আটক করা হয়েছে।
ডিবি বলেছে, আটক বাচ্চু নিজেই ট্রাকের মালিক। আর ট্রাকটি চালাতেন তাঁর শ্যালক সুলতান মাহমুদ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ট্রাকে পণ্য বহনের আড়ালে মাদক কারবার করে আসছিলেন।
অভিযান তদারকি কর্মকর্তা ডিএমপির (গোয়েন্দা) গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান আজ প্রথম আলোকে বলেন, আন্তজেলায় চলাচলকারী বিশালাকৃতির ট্রাকটিতে প্রাথমিকভাবে সাড়ে ১৩ টন লবণ পাওয়া গেলেও ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর ট্রাকের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও চালকের বসার আসনের নিচে বিশেষ কায়দায় লুকিয়ে রাখা ৫০ হাজার ইয়াবা বড়ি জব্দ করে ডিবি। বাচ্চু মিয়া তাঁর শ্যালক সুলতান মাহমুদকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন স্থান থেকে মাদকের চালান আনতেন। জব্দ করা ইয়াবার মূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।
ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে বাচ্চু ও সুলতান মাহমুদ দাবি করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা বগুড়া শেরপুরের বিভিন্ন চালের কারখানা থেকে ১৪-১৫ টন চাল ট্রাকে করে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ থানার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছে দিতেন এবং ফেরার পথে ইয়াবার চালান আনতেন। পরে এসব ইয়াবা ঢাকা, গাজিপুর, রাজশাহী, রংপুর ও বগুড়া অঞ্চলে পৌঁছে দিতেন। শ্যালক-ভগ্নিপতির মধ্যে চুক্তি ছিল, চালানটি সফলভাবে পৌঁছাতে পারলে দুজন সাত লাখ টাকা পেতেন। এর ৭০ শতাংশ পেতেন বাচ্চু ও ৩০ শতাংশ সুলতান মাহমুদ। টেকনাফ থেকে সাড়ে ১৩ টন লবণ নিয়ে আসার সময় এর মধ্যে কৌশলে ইয়াবা নিয়ে আসেন তাঁরা।
ডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, আসছে ঈদুল আজহায় চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রচুর পরিমাণে লবণের দরকার হয়। সে জন্য ঈদুল আজহার সময় লবণ একটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপকরণ বিবেচনায় হাইওয়ে পুলিশ, জেলা, মহানগর ট্রাফিক পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী লবণবাহী গাড়িগুলোকে নির্বিঘ্ন যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দেয়। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে বাচ্চু ও তাঁর শ্যালক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, এর আগেও তাঁরা ট্রাকে তিনটি চালান এই কৌশলে বহন করে এনে বিভিন্ন ইয়াবা কারবারিদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।