খেলাধুলা

মাহমুদউল্লাহর কারণে ভালো করার ইচ্ছা বেড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের

মাহমুদউল্লাহ তাঁর টেস্ট অবসর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেননি এখনো। অধিনায়ক মুমিনুল হক ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, এটা মাহমুদউল্লাহর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বলে এ নিয়ে কিছু বলা কঠিন।

তবে একটু ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে বলেছিলেন, শুরুর মতো শেষটাও যাতে জয় দিয়ে হয় মাহমুদউল্লাহর, এমন কিছুই চেয়েছিলেন তাঁরা। এবার সাদমান ইসলাম সরাসরিই বললেন, মাহমুদউল্লাহর অবসরের ‘ঘোষণা’ বাংলাদেশের ভালো করার ইচ্ছা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল।

সে ঘোষণার পর থেকেই হারারে টেস্টটা বাংলাদেশ আরও বেশি করে জিততে চেয়েছিল তাঁর জন্যই।

মঙ্গলবার সকালে জিম্বাবুয়ে থেকে দেশে ফিরেছেন সাদমানসহ শুধু টেস্ট স্কোয়াডে থাকা ছয়জন। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সাদমান বলেছেন মাহমুদউল্লাহর অবসর প্রসঙ্গে, ‘আমরা জানতাম না যে (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাই এমন কিছু বলবেন। উনি এমন বলার পর দ্বিতীয় ইনিংসের পর থেকে আমাদের ভালো করার ইচ্ছাটা আরও বেড়ে গিয়েছিল। মনে হয়েছিল যে ওনার জন্য হলেও ম্যাচটা জিততে হবে।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে টেস্টের তৃতীয় দিন হুট করেই ড্রেসিংরুমে মাহমুদউল্লাহ জানিয়েছিলেন, এ ফরম্যাটে বেশ কিছুদিন পর ফিরলেও এটিই হতে যাচ্ছে তাঁর শেষ।

ম্যাচ শুরুর আগেও এমন কিছু জানতেন না তাঁর সতীর্থরা, জানিয়েছেন সাদমান, ‘হঠাৎ করেই শুনতে পেরেছি, তাঁর মনে হয় এটাই শেষ টেস্ট। এরপর ম্যাচের (খেলার) একটু আগে জানতে পারি উনি আর খেলবেন না।’

এর আগে মুমিনুল বলেছিলেন, এমন অভিজ্ঞ একজনের অবসরের ঘোষণার পর তাঁর মতো তরুণ অধিনায়কের খারাপ লাগাই স্বাভাবিক।

সাদমান বলছেন, মন খারাপ ছিল সবারই, ‘তা তো অবশ্যই। উনি আমাদের দলের জন্য যা করে গিয়েছেন, সেসব অবদান তো দলে থাকবেই। আমরা সবাই একটু হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। উনি চলে যাচ্ছেন, যে করেই হোক শেষ ম্যাচটা ওনার জন্য খেলতে হবে।’

তৃতীয় দিন মাহমুদউল্লাহর অবসরের গুঞ্জন শুরু হলেও মূলত শেষ দিনের খেলা শুরুর আগে তাঁকে দেওয়া সতীর্থদের গার্ড অব অনারেই নিশ্চিত হয় ব্যাপারটি।

সাদমান জানিয়েছেন, মাহমুদউল্লাহকে সে সম্মান জানালেও দলের মূল লক্ষ্য ছিল জয়ের মুহূর্তটা তাঁকে উৎসর্গ করা, ‘আমরা তো অবশ্যই জানতাম না এটা ওনার শেষ ম্যাচ। হুট করে তিনি ড্রেসিংরুমে আমাদের জানিয়েছেন। এরপরই সবাই চেষ্টা করেছি যে তাঁর জন্য খেলব। সবার ইচ্ছা ছিল শেষ মুহূর্তটা, আমাদের জয়টা ওনাকে উৎসর্গ করব। আমরা সেভাবেই করছি।’

২২০ রানে জয়ের পর ট্রফিটাও ফটোসেশনের আগে মাহমুদউল্লাহর হাতে দিয়েছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল হক। অবশ্য মাহমুদউল্লাহর অবসরের আড়ালে আছে বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রাপ্তি। এ ম্যাচেই ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন সাদমান।

সেঞ্চুরিটা তাঁর কাছে স্বপ্নপূরণের মতো বলে মনে করেন এই ওপেনার, ‘সব ব্যাটসম্যানেরই তো স্বপ্ন থাকে প্রথম সেঞ্চুরি নিয়ে। ওই রকম প্রস্তুতিই নিচ্ছিলাম, আশা করছিলাম একদিন হবে। জিম্বাবুয়েতে নিজের সেরাটা দিতে পেরেছি। ইনিংসটা দলের জন্যও ভালো হয়েছে, দল জিতেছে। জয় নিয়েই দেশে ফিরেছি।’

জিম্বাবুয়ের কন্ডিশন চ্যালেঞ্জিং হলেও প্রস্তুতিটা ভালো ছিল বাংলাদেশের। মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন আহমেদ, মুমিনুল হকরা কাজটা সহজ করে দিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন সাদমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *