প্রচ্ছদ

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া: কিশোয়ার চৌধুরী দ্বিতীয় রানার আপ

ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ায় তৃতীয় স্থান (দ্বিতীয় রানার আপ) অর্জন করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রতিযোগী কিশোয়ার চৌধুরী। আজ মঙ্গলবার প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হয়।

এবারের আসরের মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতেছেন জাস্টিন নারায়ণ। প্রথম রানার-আপ হয়েছেন পিট ক্যাম্পবেল। প্রথম স্থান অর্জনকারী বাড়ি ফিরছেন প্রায় এক কোটি ৬০ লাখ টাকা পুরস্কার এবং মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়ার ২০২১ সালের খেতাব নিয়ে। তৃতীয় হয়ে কিশোয়ার পেয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ টাকা। আর দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী পিট ক্যামবেল জিতেছেন প্রায় ২০ লাখ টাকা।

দুদিনের গ্র্যান্ড ফিনালের প্রথম দিনে ৫১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন কিশোয়ার। অন্যদিকে ৫৩ পয়েন্টে শীর্ষে ছিলেন পিট আর ৫০ পয়েন্টে তৃতীয় ছিলেন জাস্টিন। দ্বিতীয় দিন শেষে ১১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থেকে সন্তুষ্ট থাকতে হয় কিশোয়ারকে। অন্যদিকে পিটও শীর্ষস্থান ধরে রাখতে পারেননি। তিনি ১২৪ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছেন। তার চেয়ে মাত্র এক পয়েন্ট বেশি পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হন জাস্টিন।

আর এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন বিশেষ অতিথি ও সিডনির অন্যতম সেরা রাঁধুনি পিটার গিলমোর। মাস্টারশেফের বহু জটিল রান্নার চ্যালেঞ্জ তারই করা। আজ তিনি সরাসরি উপস্থিত ছিলেন। আর তিন প্রতিযোগীর জন্য তিনি রাখেন একই রান্নার পরীক্ষা। তাদের রাঁধতে দেওয়া হয় দুটি ভাগে। প্রথম ভাগে রাঁধতে হয়েছে স্কুইড। এই স্কুইডকে ছিলে এর ওপর মাশরুমের কাস্টার্ড, মাখন আর চিনাবাদাম দিতে হয়। দ্বিতীয় ভাগে ছিল ডেজার্ট। নাম গোল্ডেন ক্র্যাকার বা স্বর্ণের বল। এর ভেতর থাকবে বিভিন্ন মিষ্টির দানা। এই খাবারটি সিডনির বিখ্যাত অপেরা হাউস রেস্টুরেন্টের জন্য বানানো হয়েছে। প্রায় তিন মাস সময় লেগেছে এ ডেজার্টটির রেসিপি তৈরিতে।

কঠিন এই মিষ্টি তৈরি করতে গিয়ে তিন প্রতিযোগীকেই পড়তে হয়েছে মহাবিপদে। বিশেষ করে যখন স্কুইডের চামড়া ছাড়ানোর সময় আসে তখন প্রায় হাল ছাড়তে বসেছিল তিনজনই। তবে দর্শক সারিতে থাকা প্রতিযোগীদের পরিবার আর অন্যান্যদের উল্লাসে লড়াই চালিয়ে যান তারা। এ রান্না নিয়ে কিশোয়ার বলেন, ‘এটা এভারেস্টে ওঠার মতো কঠিন ছিল।’

এবার পান্তাইলিশে বাজিমাত

গত ১৯ এপ্রিল শুরু হয় রান্না বিষয়ক জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া’। সেরা ২৪ জনকে নিয়ে শুরু হওয়া এ প্রতিযোগিতায় অন্যতম প্রতিযোগী ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কিশোয়ার চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরু থেকেই দর্শক জনপ্রিয়তায় শীর্ষে ছিলেন কিশোয়ার। আবার বাংলাদেশি খাবার রান্না ও পরিবেশন করা নিয়েও খুবই উৎসাহী ছিলেন কিশোয়ার। বাছাই পর্বে নিজের পরিচিতে কিশোয়ারের যে কথা বিচারকসহ হাজারো দর্শকের মনে কাড়ে তা হলো, ‘রান্না নিয়ে আমার স্বপ্ন হলো বাংলাদেশি একটি রান্নার বই লিখে যাওয়া। কারণ আমি যদি এটা আমার সন্তানের জন্য রেখে না যাই, তবে বাবা-মার কাছ থেকে পাওয়া বাংলাদেশের সেই ঐতিহ্য আমার সঙ্গেই শেষ হয়ে যাবে।’

বাছাই পর্বে মাছ আর কাঁচা আমের রেসিপির পর একের পর এক বাংলাদেশি খাবার মাস্টারশেফের মঞ্চে তুলেছেন কিশোয়ার। এরপর রান্না করেছেন টমেটো এবং পুদিনা পাতা দিয়ে পাস্তা, টমেটো দিয়ে মাছের ঝোল, শিমের ভর্তা আর জিরা ভাত, গলদা চিংড়ি ভাজা, বিটরুট সবজি, শসা দিয়ে মাছ ভাজা, ফুচকা, চটপটি, সমুসা, দম-আলু আর তেঁতুল চাটনি, রেঁধেছেন খিচুড়ি, বেগুন ভর্তা আর নিরামিষ ভোজ, খাসির রেজালা আর ঘিয়ে ভাজা পরোটা, নেহারি এবং পান্তা-‘ইলিশ’ আর আলুভর্তার মতো বাঙালি খাবার। প্রতিবারই খাবারগুলো বাঙালির ঐতিহ্যবাহী খাবার সেটি উল্লেখ করেছেন কিশোয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *