শিক্ষা ও সাহিত্য

মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে যা বললেন মাহবুব উল আলম হানিফ


ডেস্ক রিপোর্ট, ধূমকেতু ডটকম: দাখিলের বাংলা, ইংরেজি ও গণিত খাতা ভিন্নধারার শিক্ষকদের দিয়ে মূল্যায়নের সুপারিশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল পরীক্ষার বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের উত্তরপত্র অন্য ধারার শিক্ষকদের মাধ্যমে মূল্যায়নের পরামর্শ দিয়েছে একটি সংসদীয় কমিটি। সংসদের সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কমিটির গত বৃহস্পতিবারের সভায় এ সুপারিশ করা হয়। নিয়মানুযায়ী সংসদীয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

এ প্রসঙ্গে কমিটির সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কারণ, দেখা যাচ্ছে দাখিলে এসব বিষয়ে ভালো করা অনেক শিক্ষার্থী পরে এসব বিষয়ে ভালো করছে না। অর্থাৎ তাদের মধ্যে দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে। অনেক সংসদ সদস্যই এ বিষয়টি তুলে ধরেছেন। সে কারণে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‌‘মনে হচ্ছে, একই ধারার শিক্ষকরা সবাই ঠিকমতো শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র দেখতে পারছেন না। দাখিল পাস করেই উচ্চশিক্ষার দিকে যায় শিক্ষার্থীরা এবং পরবর্তীতে চাকরির জন্য অনেক পরীক্ষায় তাদের অংশ নিতে হয়।’

আরোও পড়ুন: বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

হানিফ বলেন, ‘এখানে সঠিক মূল্যায়ন হলে, পরে আর তাদের সমস্যায় পড়তে হবে না বলেই আমরা চাই তারা এসব বিষয়ে যথাযথ যোগ্যতা অর্জন করুক এবং সেভাবেই মূল্যায়ন হোক। কিন্তু এসব বিষয়ে যোগ্য শিক্ষকেরও সংকট আছে। আবার অনেকের মধ্যে অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার প্রবণতাও আছে। অন্য ধারার শিক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন হলে, এসব সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করেছে কমিটি।’

কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য সরকার অনেক টাকা খরচ করে কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ফল আমরা দেখতে পাই না। তাদের শিক্ষার গুণগতমান প্রত্যাশিত মাত্রায় অর্জিত হয় না। আলিয়া মাধ্যম থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের আমরা গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ভূমিকা রাখতে দেখি না। এ কারণেই আমরা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের দাখিল শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের খাতা অন্য কোনো মাধ্যমের শিক্ষকদের মূল্যায়ন করার সুপারিশ করেছি। এটা করা গেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটা চাপ থাকবে এবং তারা নিজেদের গুণগত মান উন্নত করার চেষ্টা করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষকের মধ্যে নিজেদের চাকরির স্বার্থে শিক্ষার্থীদের পাস করানোর প্রবণতা দেখা যায়। আমাদের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে এই সুযোগ তারা পাবে না।’

তবে মাদ্রাসা শিক্ষকদের অনেকেই মনে করেন, শিক্ষক নিয়ে সংকট গত কয়েক বছরে কেটে যাওয়ায় এসব বিষয়ের যথাযথ মূল্যায়নের জন্য মাদ্রাসার শিক্ষকরাই যথেষ্ট।

নোয়াখালীর হাতিয়ার হাজী ফাজিল আহমদ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, বিএসসি কিংবা এমএসসি পাস করা শিক্ষকরা অংক বা ইংরেজির মতো বিষয়গুলো পড়ান এখন। এ বছর করোনার মধ্যেও আমরা অংক ও ইংরেজি বিষয়ে আলাদা করেও পড়ানোর ব্যবস্থা করেছি শিক্ষার্থীদের। এখন শিক্ষকরাও মানসম্পন্ন। তাই অন্য ধারার শিক্ষকদের দিয়ে খাতা মূল্যায়নের আর দরকার আছে বলে মনে হয় না।
সূত্র: বিবিসি বাংলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *