নিজস্ব প্রতিবেদক, ধূমকেতু ডটকম: রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ১০ টাকায় মেলে চোখের সব চিকিৎসা। অপারেশন তো হয়-ই, রোগীদের সব ওষুধও হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়। করোনা মহামারির মধ্যেও এখানে চিকিৎসাসেবা চলেছে স্বাভাবিক গতিতে। অপারেশনও নিয়মিত হচ্ছে। ১৩টি অপারেশন থিয়েটার রয়েছে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ হাজার রোগী এই হাসপাতালের বহির্বিভাগে আসেন চিকিৎসাসেবার জন্য। তবে মাস্ক পরা ছাড়া কাউকে হাসপাতালে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না।
২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ৯টি বিভাগ চালু রয়েছে। এগুলো হচ্ছে—ক্যাটার্যাক্ট, কর্নিয়া, গ্লুকোমা, রেটিনা, অকুলোপ্লাস্টিক, পেডিয়াট্রিক অপথোমোলজি, নিউরো অপথোমোলজি, কমিউনিটি অপথোমোলজি ও লোভিশন। রয়েছে বিনামূল্যে কিংবা স্বল্পমূল্যে বিভিন্ন টেস্টের সুবিধাও। ১০ টাকার টিকিট কাটলেই রোগীর দায়িত্ব শেষ। বাকি সব চিকিৎ বিনামূল্যে প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এবাস্টিন জাতীয় ইনজেকশনের দাম ১২ হাজার টাকা। অপারেশনের সময় এটির প্রয়োজন হয়। এটি বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। চোখের লেন্সও ফ্রি দেয়া হচ্ছে। অপারেশন শেষে রোগীর প্রয়োজনীয় সব ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। এমনকি রোগীকে যখন ছাড়পত্র দেয়া হয়, তখনও বাসায় গিয়ে রোগীর যেসব ওষুধ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় সেগুলো প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, ১০ টাকার টিকিট কিনে এ হাসপাতালে চোখের সব ধরনের চিকিৎসা ও অপারেশন করা হয়। আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা ও বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার জন্যও রয়েছে অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি। রোগীদের সব ওষুধ বিনা মূল্যে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রদান করে।
তিনি বলেন, সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত এই হাসপাতাল। কেউ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হলে তার চাকরি শেষ। আর ডাক্তার-নার্সসহ সবাই সেবা প্রদানে কো-অপারেটিভ।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গাজীপুরের বোর্ডবাজার থেকে আসা চক্ষুরোগী আব্দুল হালিম বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতালে এসে দেখি সিরিয়াল। ২০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে ১০ টাকায় টিকিট কাটার পর আবার সিরিয়ালে। তবে এবার দাঁড়াতে হলো না, সিরিয়ালে বসতে হলো।’
তিনি বলেন, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে এসেই দেখছি অনেক রোগীর ভিড়। সুশৃঙ্খলভাবেই চলছে এখানকার কার্যক্রম। রোগীরাই নিজ উদ্যোগে অনেকটা শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলার মধ্যে দিয়ে সেবা নিচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেও বেশ সুশৃঙ্খলভাবে কার্যক্রম চালাতে দেখা গেল।
একই কথা বলছেন, সিরাজগঞ্জ থেকে আসা চিকিৎসাধীন রোগী রোজিনা (৬০)। তিনি বলেন, ১০ টাকায় টিকিট কেনার পর অপারেশন হয়েছে, লেন্সও লাগানো হয়েছে। কোনো টাকাপয়সা লাগেনি। নারায়ণগঞ্জ শহরের গলাচিপার আবুল হোসেন (৬৫), মৌলভীবাজারের আক্কাস মিয়ার (৫৫) চোখে জটিল অপারেশন হয়েছে। তাদের বাইরে থেকে কোনো ওষুধ কিনতে হয়নি। সবই হাসপাতাল থেকে দেয়া হয়েছে।